সরাইলে পূর্ব বিরোধের জেরে উভয় পক্ষের দুইজন নিহত
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পূর্ব বিরোধের জেরে উভয় পক্ষের আজাদ আলী (৬০) ও আমানত (৬০) নামের দু’জন নিহতের ঘটনা ঘটেছে। এই জিজ্ঞাসা বাদের জন্য চারজন কে আটক করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের বিশুতারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের মরদেহ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, বিশুতারা গ্রামের মৃত উমর আলির ছেলে আজাদ আলী গংদের সাথে একই এলাকার মিসির আলির ছেলে আমানত আলী পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বসত ভিটা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। প্রায় ৮ বছর আগে তাদের মধ্যে দাঙ্গা হাঙ্গামা ও হত্যার ঘটনা ঘটেছিল। এতে মামলায় উভয় পক্ষের লোকজনরাই কারাবরণ করেছেন।
এ ঘটনায় গত ৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে আজাদ গংরা গ্রামের বাইরে অবস্থান করছিলেন। সম্প্রতি আজাদ আলী গ্রামের বাড়িতে ঘর নির্মাণের প্রস্তুতি নিলে এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে প্রতিপক্ষ আমানত আলী গংরা।
এ ঘটনায় বাড়ির পাশে নিজের দোকান খুলতে যায় আজাদ। এসময় আকস্মিকভাবে আমানত আলির পক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। পরে আজাদের লোকজনও তাদের উপর হামলা চালায়। এতে বল্লমের আঘাতে গুরুতর আহত হয় মিছির আলির ছেলে আমানত। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আজাদ আলী ও আমানত কে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ জনেরই মৃত্যু হয়।
দুটি হত্যাকাণ্ডের পর গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
নিহত আজাদ মিয়ার স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সৎ মায়ের ছেলে ইনসান মিয়া আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ অপরদিকে নিহত আমানত মিয়ার কন্যা মরিয়ম বেগম বলেন, ‘বাবু ও বশিরসহ কয়েকজন মিলে আমার বাবাকে বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
গ্রামের সরদার আবেদুল ইসলাম কবুল বলেন, ‘আজাদ মিয়া ও ইনসান মিয়ার মধ্যে আগে থেকেই জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এমন ঘটনা গ্রামের বদনাম করছে। এই দুটি হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত জঘন্য। আমি ন্যায়বিচার দাবি করছি।’
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল হাসান বলেন, ‘দুটি হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
তিনি জানান, ঘটনার পর পুরো এলাকাজুড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।