সরাইলে চোলাই মদ তৈরির কারখানায় হামলা আহত ১৫, গ্রেফতার ২
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের দত্ত পাড়া মিঠুন রবি দাসের বাড়িতে চোলাই মদ তৈরির কারখানায় ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের নারী পুরুষসহ ১৫ জন আহত হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান দীর্ঘদিন যাবত মুচি বাড়িতে চোলাই মদ তৈরির কারখানা চলে আসছিল । এ নিয়ে উপজেলা আইন শৃংখলা সভায় ব্যাপক প্রতিবাদ করে আসছিল কমিটির সদস্যরা।
গত বৃহস্পতিবার রাতে মদ তৈরির কারখানায় এলাকার যুবকরা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে বাড়িঘর ভাংচুর করে। এতে উভয় পক্ষের নারী পুরুষসহ ১৫ জন আহত হয়েছে। এ ব্যাপারে দু‘পক্ষের দুটি অভিযোগ থানায় দায়ের করেছে।
এ ঘটনায় মিঠুন রবি দাস বাদী হয়ে রাহাত মিয়া সহ ১৬ জনকে আসামী করে সরাইল থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় সুমন মিয়া (২৭)ও রাসেল (২০) কে গ্রেফতার করে শুক্রবার আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর ২০১১ ও ৫ আগষ্ট ২০২০ পৃথক তারিখে উপজেলা র্নিবাহী কর্মকর্তার দফতরে মামলার প্রধান আসামি রাহাত মিয়াসহ এলাকাবাসি চোলাই মদ তৈরি ও বিক্রয় বন্ধের দাবীতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । এতে রাহাতের প্রতি একটি মহল ক্ষিপ্ত হয় বলে রাহাত ও তার স্বজনরা জানান।
মামলার বাদী মিঠুন রবি দাস জানান, কালীকচ্ছ ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সলিম উদ্দিন, খন্ডকালিন বিদুৎ কর্মচারী রাহাত, সজিব, রাসেলের নেতৃত্বে এলাকার কিছু যুবক আমদের বাড়িতে হামলা করে বাড়িঘর ভাংচুর করে ও আমাদেরকে আঘাত করে । তারা পরিকল্পিতভাবে আমাদেরকে এ এলাকা থেকে উচ্ছেদ করতে চায়।
এলাকার হাজী মানিক মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধায় মদ তৈরি ও বিক্রয়কে কেন্দ্র করে সাজন রবি দাসের ছেলে রিপন রবি দাস একই এলাকার ছেলে সুমনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এক পর্যায়ে সুমনকে তারা মারধর করে । রিপন রবি দাস উত্তেজিত হয়ে বলেন প্রকাশ্যে মদ বিক্রয় করব । এতেই সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে।
মোঃ কামাল মিয়া জানা, প্রকাশ্যে মদ বিক্রয় করা ঘোষনা দেয়ার পর তাদের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়, উভয়ের মধ্যে কিছু ইট পাটকেলের ঘটনা ঘটে। মুচিদের বাড়িঘর ভাংচুর বিষয়ে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, মুচি বাড়ির লোকজন নিজেদের বাড়িঘর নিজেরা ভাংচুর করে আলামত তৈয়ার করে মামলা দায়ের করেন। “প্রায় ৩০ বছর ধরে চোলাই মদ তৈরির সঙ্গে যুক্ত পরিবারগুলিকে এই ব্যাবসা থেকে সরিয়ে আনার জন্য অনেকবার চেষ্টা করেছি। তাদেরকে নিয়ে কয়েকবার সভাও করেছি। কিন্তু ওরা নানা অজুহাত দেখিয়ে চোলাই মদ তৈরির কারবার থেকে সরে আসেনি।” উল্টে ওই পরিবার গুলিতে বিবাহ সূত্রে আসা আত্মীয়রাও মদ তৈরির ব্যবসা শুরু করায় দিনে দিনে গ্রামে চোলাই মদ বিক্রির ব্যবসা বেড়েছে বলে জানান তিনি।
সাবেক ইউপি সদস্য পরিমল চন্দ্রদাস জানান, দু‘মাস পূৃর্বে মুচি বাড়ির মদ বিক্রির ঘটনায় একটি সালিশ সভা হয় । এ সভায় মদ তৈরি ও বিক্রয় বন্ধের সিদ্ধান্ত হলেও আজ পর্যন্ত তা না মানায় এ সংর্ঘষের সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হোসেন জানান, ঘটনার পরপর দু‘জনকে গ্রেফতার করি। বিষয়টি উর্ধৃতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, সংর্ঘষের ঘটনাটি ওসি ও কালিকচ্ছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যন আমাকে জানিয়েছেন। আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানিয়েছি। এ ঘটনায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের আশংকা নেই।
সাবেক সাংসদ এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা বলেন, মুচি বাড়ি ও এলাকাবাসির মধ্যে একটি সংর্ঘষ হয়েছে । এ বিষয়ে আপোষ মিমাংসার প্রক্রিয়া চলছে ।