সরাইল অন্নদার শিক্ষকদের কান্ড



মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল :: সরাইল অন্নদার শিক্ষকদের কান্ড । বিদ্যালয় আকস্মিক পরিদর্শন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা। শিক্ষক সংকট সহ নানা অনিয়ম দেখে তিনি হতাশ হন । শিক্ষার্থী উপস্থিতি অতিনগন্য। যে কয়জন আছে তারা মাঠে খেলছে। পাঠদানের সময় শেষ হওয়ার আগেই বিদ্যালয় ভবনেই শুরু হয়ে যায় প্রাইভেট।
গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার পর এমপি বিদ্যালয়ে যান। তার সাথে ছিলেন নির্বাহী কর্মকর্তা, অফিসার ইনচার্জ (ওসি)ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা । এরই প্রেক্ষিতে পরির্শনে আসেন এমপি। প্রধান শিক্ষক আসেন পোনে ১২টায়। তিনি অফিস পরিদর্শনের পর প্রত্যেকটি শ্রেণিকক্ষ ঘুরে দেখেন। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও শিক্ষক সংকট দেখে তিনি হতাশ হন। এ সময় কিছু শিক্ষার্থী মাঠে ছুটাছুটি করছিল। পরে এমপি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা কুমিল্লা অঞ্চলের উপ-পরিচালককের (ডিডি) সাথে মুঠোফোনে বিদ্যালয়ের নানা বিষয়ে কথা বলেন। বেলা আড়াইটায় সরজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অফিস কক্ষ বন্ধ। ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী মাঠে খেলা করছে। প্রধান শিক্ষক সহ বিদ্যালয়ে উপস্থিত আছেন ৩জন শিক্ষক। তারা পাঁচ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কাগজে কলমে দেখান ২০২ জন। কিন্তু টিফিনের পর দেখা যায় নবম ও দশম শ্রেণিতে কোন শিক্ষার্থী নেই। অষ্টম শ্রেণিতে ১৪০ জনের মধ্যে ৪জন, সপ্তম শ্রেণিতে ১৫৬ জনের মধ্যে ১ জন ও ৬ষ্ট শ্রেণিতে ১৩৭ জনের মধ্যে শ্রেণিকক্ষে আছে ১৮ জন। শুধু কাগজে দেখানো উপস্থিত ২০২ জনের মধ্যে বাস্তবে পাওয়া যায় মাত্র ২৩ জন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, টিফিনের পর আমাদের এমনিতেই ছুটি হয়ে যায়। তিনটা থেকে উত্তরের ভবনের দ্বিতীয় তলায় দরজা বন্ধ করে স্যাররা প্রাইভেট পড়ায়। অনেকেই পড়ি। ২টা ৫০ মিনিটে প্রধান ফটকে আসা মাত্র ড্রেস বিহীন অবস্থায় বিদ্যালয়ে প্রবেশ করছে এক ছাত্র। তার নাম দেয়ান আজমল মাহমুদ। নবম শ্রেণির এ ছাত্র জানায়, ৩ টা থেকে প্রাইভেট পড়তে এসেছি। সপ্তাহে ৬দিন আমরা ১৫ জন রেজাউল স্যারের কাছে পড়ি। মাসে ৪’শ টাকা করে দেয়। উত্তরের ভবনের দিকে ইশারা করে সে বলে ওইটার দ্বিতীয় তলায় স্যারে পড়ায়। শুধু শুক্রবারে বন্ধ।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হযরত আলী বলেন, আমি কুমিল্লার হোমনা থেকে এসেছি। তাই বিলম্ব হয়েছে। শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় চলে যায়। পরে আর বিদ্যালয়ে ফিরে না। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা কুমিল্লা অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. আবদুর রশিদ বলেন, সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সময়। এ সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়ে বসে প্রাইভেট পড়ানো সম্পূর্ণ বেআইনি কাজ। আমি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিব। সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা বলেন, শিক্ষক সংকটের কারনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।
-সঞ্জয়