সরাইলের তিতাসে বেইলী সেতু নির্মাণ; ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ১৮ ঘন্টা বন্ধ, যাত্রীদের দূর্ভোগ
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল :: ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের শাহবাজপুরে তিতাস নদীর ওপর সেতুর ক্ষতিগ্রস্থ অংশে শুক্রবার বেইলি সেতু নির্মাণের কাজ চলাকালে ১৮ ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে ভোর থেকে দিনভর এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও পথচারীদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। রাতের কষ্ট ছিল আরো মর্মান্তিক। নৌকায় নদী পাড় হচ্ছে দুই দিকের পথচারি ও যাত্রীরা। সুযোগে মহাসড়কের ১৪-১৫ কিলোমিটার জায়গায় ছিল সিএনজি অটোরিকশার দাফট।
সরজমিনে দেখা যায়, পূর্ব ঘোষনা মোতাবেক শুক্রবার ভোর ছয়টা থেকেই শুরু হয়েছে কাজ। ব্রীজের দু’দিকে আটকে গেছে গাড়ি। তৈরী হয়েছে যানজট। মালামাল নিয়ে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা। তবে ঢাকা ও সিলেট থেকে ছেড়ে আসা কোচ গুলো ভাড়া কম নিচ্ছেন না। এমন অভিযোগ যাত্রীদের। সকাল ৬টা থেকে সেতুর ওপর দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ১২০ জন শ্রমিক কাজ করে। সেতুর দুই দিকে ২১০ ফুট জায়গায় বেইলী সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। কারন ওই জাগায়ই সেতুটি ধেঁবে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। আর সরাসরি প্রত্যক্ষ করছেন সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী। মহাসড়কের শাহবাজপুর তিতাস ব্রীজের দুপাড়ে আটকে গেছে সকল ধরনের যানবাহন। তবে মালবাহী ট্রাকের সংখ্যাই বেশী । নদীতে সওজের দুইটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা যাত্রীদের বিনামূল্যে পাড়াপাড়ের কাজ করছে। এ ছাড়া স্থানীয় ১০-১২টি নৌকা জনপ্রতি ৫ টাকা ভাড়ায় নদী পাড় করছে। উভয় দিকে আধা কিলোমিটার দূরে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে বৃদ্ধ ও অসুস্থ্য লোকজন অত্যন্ত কষ্টে পায়ে হেঁটে নৌকায় উঠছেন। কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই নৌকায় উঠছেন সাঁতার না জানা অনেক মহিলা ও শিশু। তবে বেইলী সেতু নির্মাণের সুযোগে বিশ্বরোড মোড় থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত আর মাধবপুর থেকে রাজামারিয়া কান্দি পর্যন্ত ১৪-১৫ কিলোমিটার সড়কে ছিল সিএনজি অটোরিকশার দাফট। কিছু মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার চান্দুরা দিয়ে ঢাকায় আর কুট্রাপাড়া দিয়ে প্রবেশ করে নাসিরনগর-লাখাই হয়ে সিলেট গিয়েছে।
মিন্নত আলী (৩০) নামের এক অটোরিকশা চালক রশিকতা করে বলেন, সরকারের বিপদের সময় আমরাই কাজে আসি। ৯৩ দিন হরতালে আমরা সড়কে ছিলাম। আর আইন করে আমাদেরকে সড়কে চলতে দিচ্ছে না। তেলবাহী ট্রাকের চালক মোঃ জাকির হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে এসেছি। সিলেটের হরিপুর যাব। খাওয়া যেমন তেমন টয়লেটের সমস্যা প্রকট। সিলেট থেকে পরিবারসহ ঢাকায় যাচ্ছেন গোলাম মোহাম্মদ, আজিজুল ইসলাম ও ফারভিন বেগম নামের তিন যাত্রী। তারা বলেন, কষ্টের শেষ নেই। মাজারে গিয়েছিলাম। জানলে আজকে আসতাম না। আল-মোবারক নামের কোচ দিয়ে এসেছি। গাড়ির লোকজনও বলেছে ঢাকায় যাওয়া যাবে। ঢাকার ভাড়াই নিয়েছে ৪’শ টাকা। নামিয়ে দিয়েছে শাহবাজপুর। ৫ টাকা করে ভাড়া দিয়ে নৌকায় নদী পাড় হয়েছি। বাকী পথ কিভাবে যাব চিন্তায় আছি।
জেলা সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ আমির হোসেন বলেন, যাত্রীদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমরা বিষয়টি আগেই সকলকে জানিয়ে দিয়েছিলাম। ১৮ ঘন্টার আগেই কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।
-সঞ্জয়
92
99