নিম্নমানের গম গ্রহন ও বিতরনে নিষেধাজ্ঞা :: সরাইল খাদ্য গুদাম পরিদর্শনে এমপি
মোহাম্মদ মামুদ , সরাইল :::সরাইল উপজেলা খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি মূলত গম দেখতে গিয়েছিলেন গুদামে। গম দেখে চরম ক্ষুদ্ধ হয়েছেন তিনি। গুদামের কর্মকর্তা কর্মচারীদের তিনি নিম্নমানের ওই গম গুদামে গ্রহন ও বিতরন করতে সাফ নিষেধ করে দিয়েছেন।
গুদাম থেকেই তিনি নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি মুঠোফোনে গনমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন।
খাদ্য গুদাম অফিস সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি তারা সরকারি ভাবে কর্তৃপক্ষের দেওয়া ২’শ মেট্রিক টন গম গ্রহন করেছেন। ইতিমধ্যে ১’শ ৫০ মেট্রিক টন বিতরন করা হয়েছে। বিতরনকৃত গম গুলো দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সম্পন্ন করা হয়েছে। বর্তমানে মজুদ আছে ৫০ মেট্রিক টন গম।
খাদ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক আমদানি করা পঁচা বাসী পোকা ধরা মাংশ বিহীন গম নিয়ে যখন সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে ঠিক তখনই ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের (সরাইল-আশুগঞ্জ ও সদরের একাংশ) সংসদ সদস্য মৃধা ছুটে যান সরাইল খাদ্য গুদামে। তিনি গুদামে দূর্গন্ধযুক্ত একদম নিম্নমানের ওই গম দেখে হতাশ ও ক্ষুদ্ধ হন। গুদামে কর্মরত লোকদের সাথে কথা বলে মজুদ গমের খুঁজ খবর নেন।
পরে তিনি সকলকে হুশিয়ার করে সাফ বলে দিয়েছেন, আজ (সোমবার সন্ধ্যা) থেকে এ গুদামে আমি অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত একটি গম ও ঢুকবে না, বের হবে না। এই পঁচা বাসি গম যেন আমার এলাকার কোন দরিদ্র অসহায় লোকদের খাওয়ানো না হয়। এ গুলো গো খাদ্যের ও অনুপযোগী। সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান গুদামে কর্মরত লোকজন।
সরাইলের একাধিক ডিলার ক্ষোভের সাথে বলেন, নিম্নমানের ওই গম গুলো ক্রয় করে সারা জীবনের পাপের প্রায়শ্চিত্য করছি। এখন এ গুলো বিক্রি করতে পারছি না, ফেলে দিতেও পারছি না। কারন হাঁস মোরগও এ গুলো খাচ্ছে না। অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, গমের টন প্রতি সরকার নির্ধারিত মূল্য হচ্ছে ৩০ হাজার ৪০৭ টাকা। অথচ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট লোকজন অর্ধেকের ও কম মূল্যে ১৫ হাজার টাকা টন দরে গম গুলো বিক্রি করেন।
গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল গনি মিয়া গম গুলা নিম্নমানের এ কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা চাকুরী করি। উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মত কাজ করতে হয়। মজুদ ৫০ মে: টন গম কোন খাতে খরচ করবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গমের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে স্থানীয় এমপি বিতরন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। পরবর্তি নির্দেশনা পাওয়ার পর ব্যবস্থা নিব। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ ইছাহাক হাওলাদার বলেন, এমপি মহোদয়ের পরিদর্শনের পর গম গ্রহন ও বিতরন বন্ধ রয়েছে। আমরা গমের কোন চাহিদাও দেইনি। আমাদের হাত পা বাঁধা। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মত কাজ করতে হয়।
উপজেলা খাদ্য ক্রয় কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য কেজি গম সীলগালা করে খাদ্য কর্মকর্তা ও আমার যৌথ স্বাক্ষরে জেলায় পাঠিয়েছি। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তি ব্যবস্থা নিব।