সরাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে চামচিকার বাসা সীলগালা করলেন ইউএনও



মোহাম্মদ মাসুদ , সরাইল থেকেঃ
সরাইলের অরুয়াইল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। আছে ভবন। আছে কোয়ার্টার। কাগজে কলমে কর্মচারি আছেন চারজন। এখানে কোন সেবা নেই। কর্মচারীরাও আসেন না। রোগীরা ও আসে না। মন চাইলে সপ্তাহে একবার কষ্ট করে আসেন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে। বেতন আছে ঠিকঠাক। দিব্বি বাজারে বসে অফিস সময়ে রোগী দেখছেন আর দেদারছে ঔষধ বিক্রি করছেন এ কেন্দ্রের সাব-এ্যাসিসটেন্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাঃ রফিক। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না হওয়ায় অনেকটা জরাজির্ন হয়ে পড়েছে কেন্দ্রটি। গতকাল বৃহস্পতিবার ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে আকস্বিক পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন। জনমানব শুন্য ওই কেন্দ্রে ইউএনও বিশ মিনিট সময় কাটান। চারজন কর্মীর মধ্যে কারও দেখা পাননি তিনি। সকলেই অনুপস্থিত। ডাঃ রফিক অফিস ফাঁকি দিয়ে বাজারে তার নিজস্ব ফার্মেসিতে বসে দিব্বি ঔষধ বিক্রি করছেন। নিশ্চিন্তে ভিজিটের বিনিময়ে রোগী দেখছেন। কেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ করে ইউএনও দেখেন প্রত্যেক কক্ষেই চামচিকার বাসা। এরা কিচিরমিচির করে খেলা করছে। এলাকার শতাধিক লোকের অভিযোগ এখানে কেউ আসে না। ডাক্তার কর্মচারী সকলেই নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাদের উপজেলার কর্তা ব্যক্তিই অফিসে আসেন মাসে ২/১ দিন। এখানে কোন ধরনের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয় না। সরকার অযথা টাকা খরচ করছেন। হাজিরা খাতায় গত বুধবারের স্বাক্ষর থাকলেও গতকালের স্বাক্ষর ছিল না ডাঃ রফিকের। এম এল এস এস নুরুল ইসলামের স্বাক্ষর নেই গত সোমবার (২৫ আগষ্ট) থেকে। আর কল্যাণ পরিদর্শীকাকে সাময়িক বরখাস্থ করে রেখেছেন কর্তৃপক্ষ। নির্বাহী কর্মকর্তা ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিজ হাতে সীলগালা করে দেন। হাজিরা খাতাটি সিজ করে নিয়ে আসেন ইউএনও। ঘটনাটি জেনে প্রথমবারের ফাঁকিবাজদের ছাড় দেওয়ার অনুরোধ করেন মেডিকেল অফিসার (এমসিএইচ) ডাঃ গাজী আবদুল মান্নান। ডাঃ রফিকের সকল অনিয়ম ও দূর্নীতি পূর্বেও একাধিকবার জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সেই যাত্রা মোটা অংকের টাকা খেয়ে ধামা চামা দিয়েছেন কর্তা বাবুরা। একাধিক সূত্র জানায়, সরাইল উপজেলায় মোট চারটি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে। প্রত্যেকটিতে একজন সাকমু সহ মোট চারজন কর্মরত। চারটি কেন্দ্রের সবকটির অবন্থা একই। এ গুলোতে সেবার নামে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা শুধু লুটপাট হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ের লোকদেরকে ফাঁকিতে সহায়তা করছেন উপজেলার কর্তা বাবুরা এমন অভিযোগ ন্থানীয় শতাধিক লোকের। ডাঃ মান্নানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি নিজেই অফিসে আসেন না নিয়মিত। ছয় মাসে একবার মাঠে যান না তিনি। সরাইল উপজেলা মেডিকেল অফিসার (এমসিএইচ) ডাঃ গাজী আবদুল মান্নান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি দ্রুতই সরাইল থেকে বদলি হয়ে যাচ্ছি। আমার এমন লোক আছে যারা বললে আপনাদের লেখা বন্ধ হয়ে যাবে। আমিও তো অফিসে আসি না। আপনারা লিখেন না কেন? নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরান হোসেন বলেন, অনেক দিন ধরে ওই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ শুনে আসছিলাম। ডাঃ রফিক গ্রামের বিভিন্ন ঝামেলায় জড়িত। গতকাল তাদেরকে হাতেনাতে ধরলাম।