সরাইলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষনের পর হত্যা, গ্রেপ্তার- ২
সরাইল প্রতিনিধিঃ সরাইলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী তানিয়া আক্তার (১৪) কে পালাক্রমে ধর্ষনের পর হত্যা করা হয়েছে। উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাটানিশার গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার সন্ধায় তানিয়ার লাশ বাড়ির পাশের ফসলি মাঠ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ব্যাপারে সরাইল থানায় মামলা হয়েছে। মামলার সন্দেহ ভাজন দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, আনসার বিডিপি’র সদস্য আবদুল বারিকের মেয়ে তানিয়া আখিঁতারা আলহাজ্জ্ব নূরুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। গত মঙ্গলবার রাতে তানিয়া নিজ বাস গৃহে বসে পড়ছিল। রাত সোয়া ১০টায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে তানিয়া ঘর থেকে বের হয়। আধাঘন্টা পেরিয়ে গেলেও তানিয়া আর ঘরে ফিরেনি। তখন তার বড় ভাই মানজুর ঘর থেকে বেড়িয়ে দেখে ল্যাট্রিনের সামনে বদনাটি এলোমেলো ভাবে পড়ে আছে। তার তখন সন্দেহ হয়। তানিয়া নেই। রাতভর তার স্বজনরা পুরো গ্রাম খুঁজে কোথাও পায়নি। গত বুধবার দুপুরে পার্শ্ববর্তী কাইন্নুছ গ্রামের শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসার পথে তানিয়ার বাড়ির পূর্ব পার্শ্বে ফসলি জমিতে তানিয়ার বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে। শিক্ষার্থীরা ভয়ে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে সোরচিৎকার করতে থাকে। পরে তারা তানিয়ার স্বজন সহ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের খবর দেয়। তারা ঘটনাটি পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে সরাইল থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাতে তানিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরন করেছে। সরজমিনে গেলে দেখা যায়, স্কুল ছাত্রীর মা মেয়ের প্রতি মূহুর্তে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। তানিয়ার বড় ভাই মানজুর জানায়, ঘটনার কিছুক্ষণ আগে কয়েক জন যুবক আমাদের উঠানে এসেছিল আমি তাদেরকে চিনতে পারিনি। তানিয়া নিখোঁজের পর খুজতে বের হয়। রাত ১১টার দিকে মাঠ থেকে রাস্তায় উঠতে দেখি মোড়াহাটির রহমত আলীর ছেলে জুম্মান (১৮) ও শুক্কুর আলীর ছেলে সাদ্দাম (২৫) কে। কোথায় থেকে এসেছ ? জানতে চাইলে বলে এক জায়গায় মিটিং ছিল। আমার বোনকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা করেছে বখাটেরা। তানিয়ার মামাত বোন উয়াছমিন বেগম (২৮) জানায়, তানিয়ার লাশ সম্পূর্ণ বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিল। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এটা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। ঘটনাস্থলে সরাইল থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) ফরহাদ আব্বাস বলেন, আঘাত ও লাশের চুরতহাল দেখে মনে হচ্ছে তানিয়াকে ধর্ষনের পর নির্মম ভাবে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা। তানিয়ার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ গোলাম মোস্তফা বলেন, সে অত্যন্ত শান্তশিষ্ঠ্য ও ভাল ছাত্রী ছিল। এমন নির্মম ঘটনা ক্ষমার অযোগ্য। আমরা বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গভীর ভাবে শোকাহত। এ বর্বর ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবী করছি। ওদিকে ঘটনার রাতেই তানিয়ার বাবা মোঃ বারিক মিয়া বাদী হয়ে সরাইল থানায় দুইজনের নাম উল্লেখ করে সন্দেহ ভাজন আরো তিনজনের বিরুদ্ধে ধর্ষন ও হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। ওইদিন গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে সরাইল থানা পুলিশ সন্দেহ ভাজন দুই আসামী কাটানিশার গ্রামের ইকবাল মিয়ার পুত্র উজ্জল (২৩) ও রজব আলীর পুত্র রুবেল (২৫) কে গ্রেপ্তার করেছে। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আলী আরশাদ বলেন, এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। |