প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-( সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধার স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হচ্ছেন উপজেলার কালীকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি মোঃ ইসমাইল খান ও শিক্ষক প্রতিনিধি মোঃ মারুফ খান। গত সোমবার রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে সোমবার রাতে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা তার স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতারনার অভিযোগে কালিকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্য, সহকারি শিক্ষক সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পলাতক অন্য আসামীরা হলেন, অভিভাবক প্রতিনিধি শরীফ মিয়া, প্রধান শিক্ষক মুখলেছুর রহমান, সহকারি শিক্ষক আবদুল মতিন খান ও মোঃ হাসান আলী। ঘটনার পর থেকেই বন্ধ রয়েছে মামলার প্রধান আসামী প্রধান শিক্ষক মুখলেছুর রহমানের মোবাইল ফোন। মঙ্গলবার ও বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন অভিযুক্ত তিন শিক্ষক। জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধীন সেকায়েফ প্রকল্পের আর টি (রিসোর্স টিচার) শিক্ষক নিয়োগ এবং পাঠদান কর্মসূচী অনুমোদন পত্রে স্থানীয় এমপি ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির স্বাক্ষর জাল করেছেন সকল আসামীদের যোগ সাজসে প্রধান শিক্ষক। গত সোমবার সকালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তার কার্যালয়ে স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিষদের চেয়ারম্যান এম.পি জিয়াউল হক মৃধা। গত ১০ এপ্রিল ব্যবস্থাপনা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অদ্যাবধি শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদন পায়নি নতুন কমিটি। নিয়মানুযায়ী অনুমোদনের পূর্ব পর্যন্ত পুরাতন কমিটিই দায়িত্ব পালন করবে। সোমবার সকালে সেকায়েফ প্রকল্পের আর টি (রিসোর্স টিচার) শিক্ষক নিয়োগ এবং পাঠদান কর্মসূচী অনুমোদন পত্র মাধ্যমিক অফিসে জমা দেন প্রধান শিক্ষক মুখলেছুর রহমান। সভাপতির স্থলে সংসদ সদস্যের সীল ব্যবহার করা হয়। অনুমোদন পত্রে এমপির স্বাক্ষর জাল করা হয়। বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য মোঃ আতাহার হোসেন বকুল বলেন, কমিটির ২/১ জন সদস্য ও কতিপয় শিক্ষক মিলে এমপির স্বাক্ষর জাল করেছেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ ছাইদুর রহমান বলেন, এম পি’র স্বাক্ষরটি জাল করেছে নিশ্চিত হয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ফোন করেছি। মোবাইল বন্ধ পেয়েছি। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুখলেছুর রহমানের মোবাইল ফোনে (০১৯২৪-৩১২৫৫৬) একাধিকবার চেষ্টা করে ও কথা বলা সম্ভব হয়নি। দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষিকা হোসনা বানু বলেন, প্রধান শিক্ষক ছুটিতে আছেন। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা বলেন, আমার স্বাক্ষর জাল করার বিষয়টি অত্যন্ত গর্হিত কাজ। দায়ী শিক্ষক ও কমিটির লোক জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। শিক্ষকদের একটি সিন্ডিকেট বিদ্যালয়টি ধ্বংসের চেষ্টা করছে। তারা টিউশনি, অর্থ লুটপাট, বিধি বহির্ভূত ভাবে পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। আমি সকল অনিয়মের বিরোধিতা করি। তাই ওই চক্রটি আমার স্বাক্ষর জাল করে প্রতারনা করেছে। এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম চক্রবর্তীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ২ জনকে গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করে বলেন, বাকীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। |