মোহাম্মদ মাসুদ : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের বিভিন্ন এলাকায় গাছের ডাল ও বাঁশকে খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করে অবৈধভাবে একাধিক বিদ্যুৎ লাইন টানা হয়েছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন সেইসব এলাকায় চলাচলকারী হাজারো মানুষ। অভিযোগ আছে, এখানকার পিডিবি’র একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী মোটা অঙ্কের অর্থবাণিজ্যের মাধ্যমে এসব ঝুঁকিপূর্ণ লাইন টেনেছে। উপজেলার নোয়াগাঁও এলাকার নুরতাজ মিয়া বলেন, এটি পল্লী বিদ্যুতের এলাকা। আবেদন করেও পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ পাওয়া যায়নি। পরে লাখ টাকা চুক্তির পর এখানে পিডিবি’র লাইন টানা হয়েছে। জসিম মিয়া নামে এক ব্যক্তি বলেন, এই লাইন বাবদ আমরা বিভিন্ন সময়ে পিডিবি’র লোকদের আড়াই লাখ টাকা দিয়েছি। তারা গাছের ডাল ও বাঁশকে খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করে লাইন টেনে একাধিক বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করেছে। টাকা নেওয়ার সময় বলেছিল পিডিবি থেকে খুঁটির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সিরাজ মিয়া নামে এক সমাজকর্মী বলেন, পল্লী বিদ্যুতের এলাকায় তারা অবৈধভাবে পিডিবির লাইন টেনেছে, তার উপর খুঁটির পরিবর্তে এখানে ব্যবহার করা হয়েছে গাছপালা ও বাঁশ। এতে ঝুঁকি মধ্যের বসবাস করছে এখানের কয়েক হাজার মানুষ। এদিকে উপজেলার কাটানিশার ও চুন্টা এলাকায় গাছ ও বাঁশ দিয়ে টানা হয়েছে একাধিক পিডিবি’র বিদ্যুৎ লাইন। চুন্টা এলাকার কামাল মিয়া বলেন, এই ঝুঁকিপূর্ণ লাইন টানতে এখানকার পিডিবি’র কতিপয় কর্মকর্তা নিয়েছেন এক লাখ ২০ হাজার টাকা। বলেছিলেন সময়সুযোগ করে খুঁটি দেওয়া হবে। এখন খুঁটি চাইতে গেলে আরো টাকা দাবি করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাড়া-মহল্লায় এভাবেই ঝুঁকিপূর্ণ লাইন টেনে পিডিবির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। টাকা নেওয়ার পর তারা বেমালুম ভুলে গেছেন এসব বিদ্যুৎ লাইনে খুঁটি দেওয়ার কথা। সরাইল উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা পারভীন বলেন, এসব ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ লাইন নিয়ে উপজেলা মাসিক সভায় একাধিবার আলোচনা করা হয়েছে। মানুষ ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছেন। পিডিবি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এ ব্যাপারে সরাইল পিডিবি বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এএফএম নুরউদ্দিন আহমেদ বলেন, এসব ঝুঁকিপূর্ণ লাইন আগে করা হয়েছে। এ বিদ্যুৎ লাইনে দূর্ঘটনায় মানুষ হতাহতসহ নানা সমস্যার কথা লিখিতভাবে পিডিবি’র উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। খুঁটিসহ প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরঞ্জাম চাওয়া হয়েছে। পিডিবি থেকে কিছুই দেওয়া হচ্ছে না। এসব লাইনে যত বড় ধরণের ঝুঁকিই থাকুক না কেন, পিডিবি মালামাল না দেওয়া পর্যন্ত কিছুই করা সম্ভব নয় বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী।
|