মো. মাসুদ : টানা এক সপ্তাহ যাবত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের টিঘর গ্রামে সরকারি খাস পুকুর থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ফলে বিশাল এ খাসপুকুরের পাড়ের শতাধিক ঘরবাড়ি এখন হুমকির মুখে। ভূক্তভোগীদের দাবি, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে একাধিকবার জানানো হলেও অদৃশ্য কারণে তিনি নিরব রয়েছেন। ব্যবস্থা নিব নিচ্ছি বলে পার করেছেন এক সপ্তাহ। এলাকায় বিরাজ করছে উত্তেজনা। যে কোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। টিঘর গ্রামের বাসিন্দা মো. শের আলী (৭০) বলেন, প্রায় ১৮একর পরিমাণ বিশাল এ পুকুরটি ১নং খাস খতিয়ানভূক্ত। এ পুকুর থেকে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব পায়। পুকুরটির চারপাড়ে কয়েকশ’ ঘরবাড়ি রয়েছে। গত সাতদিন ধরে অবৈধভাবে এ পুকুর থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আশপাশের বসতবাড়ির বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আশরাফ আলী (৬৫) বলেন, গ্রামের আক্তার মিয়া নামে এক ব্যক্তি সরকারি এ পুকুরে ড্রেজার ফেলেছে। পুকুরপাড়ের লোকেরা চরম আতঙ্কে রয়েছে। ড্রেজার শ্রমিক মো. ইয়াছিন মিয়া (২৪) বলেন, ড্রেজারসহ আমাদের ভাড়ায় এনেছেন এখানকার কয়েকজন লোক। পুকুরটি সরকারি কি না ? তা আমাদের জানা নেই। পানির নীচে মাটির যে স্তর আছে তার ২৫/৩০ ফুট নীচ পর্যন্ত মাটি ও বালু উঠানো হচ্ছে। ড্রেজার পরিচালনাকারী টিঘর গ্রামের মো. আক্তার মিয়া বলেন, এ পুকুর থেকে ১২ লাখ টাকার বালু উত্তোলনের অর্ডার রয়েছে। পুকুরটি সরকারি। এলাকার সর্দার-মাতব্বদের সাথে কথা বলেই ড্রেজার লাগানো হয়েছে। ইউএনও স্যার লোক পাঠিয়ে বাঁধা দিয়েছিল। পরে উনার (ইউএনও) সাথে যোগাযোগর মাধ্যমে একটা ব্যবস্থা করেই এ পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করছি। টিঘর গ্রামের ইউপি সদস্য মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারি এ পুকুর থেকে বালু উত্তোলনের কারণে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমিসহ এলাকার অনেকে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা এসে বাধা দিয়েছিল। পরে কিভাবে তারা অনুমতি এনে পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করছে এ বিষয়টি আমার জানা নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান খান বলেন, টিঘর গ্রামের সরকারি পুকুর থেকে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে বাধা দেওয়া হয়েছে। বাধা উপেক্ষা করে যদি বালু উত্তোলন চালু রাখে, তবে বিধি মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা নিব। সরকারি ওই পুকুরে বালু উত্তোলন অব্যাহত আছে, তাৎক্ষনিক বালু উত্তোলন বন্ধের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নিবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন, নিয়মের মধ্যেই আমরা ব্যবস্থা নিব। এতে একটু সময়তো লাগবেই। ডাক্তার আসার পূর্বে রোগী মারা যেতে পারে। |