৪৬ বছর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সম্মাননা দিল একই গ্রামের ৮০ শহীদ পরিবারকে
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিটঘর গ্রামে হানাদারদের গণহত্যার শিকার হয় ৮০ জন। এই শহীদদের পরিবারের প্রত্যাশা ছিল একদিন না একদিন শহীদদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি সম্মান পাওয়া যাবে। অবশেষে বহুপ্রত্যাশিত স্বপ্ন পূরণ। গতকাল রোববার গণহত্যা বিটঘরে “বিজয়ের উচ্ছাস” নামক অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
যে মাটিতে ৮০ শহীদ শায়িত আছেন সেখানে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে জড়ো হয়েছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্মকর্তা বৃন্দ, জনপ্রতিনিধি সহ শোকাহত কয়েক হাজার মানুষ। স্বজনহারাদের যে চোখে ছিল বেদনার অশ্রু সে চোখে সহমর্মিতা পেয়ে দেখা গেছে গর্বে ভরা আনন্দ অশ্রু।
জাগো ফাউন্ডেশনের অঙ্গ সংগঠন ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ এর উদ্যোগে জেলা পুলিশের আয়োজনে ৮০টি শহীদ পরিবারকে গতকাল রোববার দেওয়া হয়েছে সংবর্ধনা। প্রদান করা হয়েছে দেশের জন্য আত্মত্যাগীদের সম্মান সূচক স্মারক ক্রেষ্ট ও উপহার। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এই আয়োজনের অন্যতম উদ্যোক্তা মোঃ মিজানুর রহমান পিপিএম (বার) (অতিরিক্ত ডিআইজি), পুলিশ সুপার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরহাদ রহমান মাক্কী, সাবেক অতিরিক্ত সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, এডভোকেট মোঃ আবদুর রহমান, চেয়ারম্যান, সরাইল উপজেলা পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, উম্মে ইসরাত, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আল আমীন শাহীন, সম্পাদক সাপ্তাহিক নতুনমাত্রা, সিনিয়র সহ সভাপতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব।
এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার, সাধারণ সম্পাদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ সহ অন্যান্য অতিথি বৃন্দ। বিটঘর গ্রামে পৌঁছেই প্রধান অতিথি সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ স্থানীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন বধ্য ভূমিতে গিয়ে শহীদদের সম্মান জানিয়ে স্মারক বৃক্ষ রোপন করেন। পরে বিটঘর বালুর মাঠে অনুষ্ঠানে আলোচনা ও সংবর্ধনা পর্বে অতিথিবৃন্দ পৌঁছলে এক ব্যতিক্রমী দৃশ্যপট পরিলক্ষিত হয়।
অনুষ্ঠানে এই পর্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রধান মোঃ তারেজ আজিজ, প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তুমুল জনপ্রিয় মানুষ হিসেবে পরিচিতি অনুষ্ঠানের কর্ণধার জনাব মোঃ মিজানুর রহমান পিপিএম (বার) (অতিরিক্ত ডিআইজি), পুলিশ সুপার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
অনুষ্ঠানে বক্তাদের বক্তব্যে ছিল বেদনা বিধুর অভিব্যক্তি। নির্মম হত্যাযজ্ঞের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে অনেকে আবেগ প্রবন হয়ে উঠেন। শহীদ পরিবারকে যখন ক্রেষ্ট প্রদান করা হচ্ছিল তখন সন্তান হারা পিতা-মাতা, স্বজন হারা স্ত্রী-কন্যাদের চোখে ছিল আনন্দ বেদনার অশ্রু। এই স্বীকৃতিকে তারা অনেক পাওয়া বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করেছে। কারও কারও দাবী ছিল স্বপ্ন পূরণ হয়েছে যখন স্থানীয়ভাবে শহীদদের স্মরণে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মান হবে এবং গণহত্যার শিকার পরিবারগুলো পাবে সরকারি-বেসরকারি সহায়তা ও সম্মান।প্রেস রিলিজ