সরাইল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কলেজ অধ্যক্ষকে মারধরের অভিযোগ
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল ॥ সরাইলে সদ্য প্রতিষ্ঠিত তিতাস মডেল কলেজের সভাপতির বিরুদ্ধে অধ্যক্ষকে মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই সাথে রয়েছে কলেজের নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধ পন্থায় মোটা অংকের টাকা উত্তোলন ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ। সভাপতি শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগের (বিতর্কিত) সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাজ্জি। অধ্যক্ষ এ কে এম রমজান আলী। গত মঙ্গলবার বিকালে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত অধ্যক্ষ রমজান আলী এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও নথিভূক্ত হয়নি এখনো।
পুলিশ, অভিযোগপত্র ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় তিতাস মডেল কলেজ। প্রতিষ্ঠায় ব্যায় হয়েছে ৩০-৩৫ লাখ টাকা। ১০ জন শিক্ষক কর্মচারি ও ৬৪ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষা বর্ষে যাত্রা শুরু করে কলেজটি। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান রাজিব আহমেদ। কলেজের জন্য শাহবাজপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি টাকা অনুদান টাকা উত্তোলন করেছেন সভাপতি। কোন টাকা কলেজের হিসাবে জমা দেননি। উনার হাতেই খরচ করেছেন। গত মঙ্গলবার বিকালে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে বসে পরামর্শ সভা। সভায় অধ্যক্ষ সভাপতির কাছে উত্তোলিত অনুদানের টাকার পরিমান ও খরচের বিষয়টির হিসাব-নিকাশের প্রস্তাব দেন। এতে করে তারা দু’জনের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে রাজিব আহমেদ, ফায়জুল হক ও রোমান মিলে অধ্যক্ষকে মারধর করতে থাকেন। অধ্যক্ষের আর্তচিৎকারে শিক্ষার্থী ও আশপাশের লোকজন দৌঁড়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। আহত অধ্যক্ষ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন কলেজ ক্যাম্পাসে অধ্যক্ষকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ধীতপুর গ্রামের বাসিন্ধা প্রবাসী মো. সুমন মিয়া বলেন, আমি কলেজের একজন অংশিদার। রাজ্জি ও রোমানের হাতে নগদ ২৩ লাখ টাকা দিয়েছি। কোন কাগজপত্র হয়নি। আর্থিক লেনদেনের বিষয় নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সভাপতি অধ্যক্ষের উপর হাত তুলেন। বিষয়টি আমার কাছে ভাল লাগেনি। গত মঙ্গলবারের পর থেকে আমি কোথাও যায়নি। মুঠোফোনটিও বন্ধ রেখেছি। সভাপতি রাজিব আহমেদ বলেন, অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ভাল হয়নি। বিষয়টি আলোচনার জন্য বসে ছিলাম। আমি অধ্যক্ষকে মারধর করিনি। আর্থিক বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। সব জানেন অধ্যক্ষ। অধ্যক্ষ রমজান আলী বলেন, আমি নগদ ৭ লাখ ৬১ হাজার টাকা দিয়েছি। রাজিব আহমেদ কলেজ প্রতিষ্ঠার কথা বলে বিভিন্ন ভাবে কোটি টাকা অনুদান উত্তোলন করেছেন। ওই টাকা দিয়েই উনি অংশিদার হতে চাচ্ছেন। টাকার হিসাব চাওয়ায় আমাকে উনারা তিনজন ভাড়াটিয়া আরো কয়েকজন মিলে দরজা লাগিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে কলেজ থেকে বের করে দিয়েছি। এ বিষয়টি কাউকে জানালে বা মামলা করলে হত্যা করে লাশ গুমের হুমকিও দিয়েছেন। থানায় মামলা দিয়েছি। কিন্তু এখানো নথিভূক্তি হচ্ছে না।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহাদাত হোসেন টিটো বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নিব। নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম মোসা বলেন, অধ্যক্ষ আমার কাছে এসেছিলেন। আমি উনাকে আইনি পক্রিয়ায় এগুতে বলেছি।