Main Menu

সরাইলে আ’লীগ নেতা কুতুব উদ্দিনের বিরুদ্ধে জায়গা দখলে নেয়ার অভিযোগ

+100%-

মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল ॥ সরাইলে আওয়ামীলীগ নেতা কুতুব উদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে দোকান ঘর দখলে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার অরুয়াইল বাজারে ১৬ বছর ধরে আবু বক্করের দখলে থাকা ওই দোকানটির পেতে মরিয়া কুতুব উদ্দিন। বাজার কমিটিসহ অধিকাংশ লোকজন বলছেন জায়গার মালিক আবু বক্কর। হঠাৎ করে মালিকানা দাবী করছেন আ’লীগ নেতা কুতুব উদ্দিন। এ বিষয়ে কুতুব উদ্দিনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন আবু বক্কর। পাল্টা দিতে পারিবারিক মারামারির মামলায় চেয়ারম্যান মোশাররফ ও ৬৪ বয়সের বৃদ্ধ আবু বক্করকে আসামী করেছেন কুতুব উদ্দিন।

অভিযোগপত্র ও স্থানীয় লোকজন জানায়, জাতীয় পার্টি করতেন কুতুব উদ্দিন। জাপা পতনের পর তিনি যোগ দেন আ’লীগে। প্রথমে ইউনিয়ন পরে উপজেলা আ’লীগের সদস্য হন। বর্তমানে ইউপি আ’লীগের উপদেষ্টা তিনি। কুতুব উদ্দিন ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে অরুয়াইল বাজারের তিন শতাংশ জায়গা ব্যাংক কর্মকর্তা আবু বক্করের কাছে বিক্রি করেন। দোকান ঘরটি আবদুল বারিকের কাছে ভাড়া দেন তিনি। ১৬ বছর ধরে এভাবেই চলে আসছে। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ওই দোকান ঘরের সংস্কার কাজ শুরু করেন। ১৫ দিন কাজ করার পর ২৫ ডিসেম্বর কুতুব উদ্দিন ও তার ছেলে সোহেল কাজে বাঁধা দেন। অভিযোগ ওঠেছে ২৬ ডিসেম্বর তারা জোর পূর্বক ঘরের খুঁটি ও বেড়ার টিন খুলে ভাংচুর ও লুটপাট করে। সরজমিনে দেখা যায়, সিমেন্টের তৈরী খুঁটি গুলি দাঁড়িয়ে আছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে এলোমেলো ভাবে পড়ে আছে টিন গুলো। পাশের ব্যবসায়ি মো. ছানা উল্লাহ (৬০) বলেন, ৬/৭ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। আমি জানি ওই মার্কেটটি আবু বক্করেরই। একই জায়গার আরেক ব্যবসায়ি মো. তাজুল ইসলাম (৪৮), ইউপি যুবলীগের সাবেক সম্পাদক জাবেদ আল-হাসান ও যুবসংহতি নেতা মো. ইসমাইল মিয়াসহ অধিকাংশ ব্যবসায়ি বলেন, কুতুব উদ্দিন জায়গাটি আবু বক্করের কাছে বিক্রি করেছেন। বিষয়টি এলাকার সকলেই জানেন।

সংস্কার করাকালে মালিকানা দাবী করছেন ও মামলার কথা বলছেন কুতুব উদ্দিন। আবদুল বারিক ওই মার্কেটে ১৬ বছর ধরে কাঠ ব্যবসা করার কথা স্বীকার করে বলেন, মার্কেটের মালিক আবু বক্কর থেকেই আমি ভাড়া নিয়েছি। আমার জানামতে আবু বক্করই এ জায়গার মালিক। অরুয়াইল বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি আ’লীগের সভাপতি মো. আবু তালেব বলেন, অনুরোধ করে আবু বক্করের কাছে তিন শতক জায়গা বিক্রি করেছেন কুতুব উদ্দিন। সারা দেশের মানুষ জানে জায়গার মালিক আবু বক্কর। এখন যা হচ্ছে এটা সঠিক না। বাজার কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমার চাচার মাথা ঠিক নেই। যা মন চাইছে তাই করছেন। পারিবারিক সম্পত্তি তিনি আত্মসাৎ করেছেন। উনার ছেলে ও নাতী আমার ভাইয়ের উপর হামলা চালায়। এ ঘটনার মামলায় আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করছেন। এর সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।

এদিকে পারিবারিক সম্পত্তির বিরোধ নিয়ে গত শনিবার সন্ধ্যার পর অরুয়াইল বাজারে কুতুব উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে সোহেল ভূঁইয়া ও নাতী (মেয়ের ছেলে) কায়েফ মিয়ার (১৭) সাথে ভাতিজা আবুল বাশার ভূঁইয়ার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে আবুল বাশারের ছুঁড়ির আঘাতে সোহেল ও কায়েফ গুরুতর আহত হন। তাদেরকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পারিবারিক এ ঘটনায় কুতুব উদ্দিনের মেয়ে কোহিনুর বেগম বাদী হয়ে আবু বক্করকে আসামী করে মামলা থানায় অভিযোগ করেছেন। তবে আহত কায়েফ ও সোহেল তাদের সাথে মারামারির ঘটনায় আবু বক্করের সম্পৃক্ততার কথা বলেনি। আবু বক্কর বলেন, আমার ক্রয় করা জায়গার সাথে তাদের পারিবারিক বিষয় জড়ানোর কারণ জানা নেই। বয়স আমার ৬৫ বছর। মামলায় দেখানো হয়েছে ৪৩ বছর। আমাকে অযথা হয়রানি করা হচ্ছে। ভাতিজাদের সাথে পারিবারিক সম্পত্তির বিরোধটিকে জায়গার সাথে যুক্ত করলেন কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে মো. কুতুব উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আমার পারিবারিক কোন বিরোধ নেই। ওই জায়গাকে কেন্দ্র করেই আমার ছেলে ও নাতীকে কূপিয়ে গুরুতর আহত করেছে।






Shares