সরাইলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জনপ্রতিনিধি শুন্য ২১’র অনুষ্ঠান !
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল ॥ সরকারি সকল অনুষ্ঠানই ছিল জন প্রতিনিধি শুন্য । ভাষা শহীদদের সম্মানে খালি পায়ে প্রভাত ফেরি করাই নিয়ম। কিন্তু গতকাল সরাইলে জুতা পায়েই প্রভাত ফেরি করেছেন সরাইল উপজেলা প্রশাসন। প্রভাত ফেরিতে নেতৃত্বদানকারী সকলের পায়ে ছিল জুতা। এ ছাড়া পুষ্পস্তবক অর্পণ, প্রভাত ফেরি সহ এ দিবসের সরকারি সকল অনুষ্ঠানই ছিল জন প্রতিনিধি শুন্য। আলোচনা সভায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অনুপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের ধিক্কার জানিয়েছেন বক্তারা।
‘মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০১৯’ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে নানা কর্মসূচি গ্রহন করেছিল উপজেলা প্রশাসন। রাত ১২টা ১ মিনিটে সরাইল কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসটির সূচনা হয়। পুস্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানটি ছিল বিশৃঙ্খল। ক্ষুদ্ধ হয়ে শহিদ মিনারে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইউএনও বলেন, আমি লিখে দিতে পারি সরাইলে কোন দিন ডেভেলপমেন্ট কাজ হবে না।’ অন্যান্য বছর ৫০-৬০ টি ফুলের তোড়া আসলেও এবার পড়েছে মাত্র ২২টি। সকাল সাড়ে ৮টায় ইউএনও’র নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী, সাংবাদিক, কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা, প্রাথমিক এবং কিন্ডার গার্টেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর অংশ গ্রহনে শুরু হয় প্রভাত ফেরি। জুতা পায়ে অনুষ্ঠিত প্রভাত ফেরিটি সরাইলের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহিদ মিনারে এসে শেষ হয়। সাড়ে ৯টায় ইউএনও এ.এস.এম মোসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আ’লীগের আহবায়ক অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ মহিলা সহ কোন জনপ্রতিনিধিই উপস্থিত ছিলেন না ওই অনুষ্ঠানে।
সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালিদ জামিল খান। বক্তব্য রাখেন- সরাইল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল, আ’লীগের যুগ্ম আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবদুর রাশেদ, সদস্য অ্যাডভোকেট জয়নাল উদ্দিন জয়, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া, সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ বদর উদ্দিন, যুবলীগের সাবেক আহবায়ক মো. মাহফুজ আলী, জাপা নেতা হুমায়ুন কবির, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন ও উপলদ্ধির পরিচালক শরীফ উদ্দিন।
বক্তারা জাতীয় এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসে জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিতে চরমভাবে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। বক্তাদের সাথে একাত্বতা পোষণ করে দেশ ও জনগণের প্রতি ওইসব জনপ্রতিনিধির আন্তরিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ধিক্কার জানিয়েছেন প্রেসক্লাবের সভাপতি বদর উদ্দিন। ত্রিতালের অংশগ্রহনে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গত বুধবার দিন ব্যাপি উপজেলার শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহনে রচনা, আবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।
শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মসজিদ সমূহে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাহী কর্মকর্তা এ.এস.এম মোসা বলেন, শহিদ মিনারে ফুল দেওয়ার সময় খালি পায়ে যেতে হয়। আর জুতা পায়ে প্রভাত ফেরি হওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, আসলে আমরা যেটা করি সেটা র্যালি হয়ে যায়। প্রভাত ফেরি নয়। জনপ্রতিনিধি সকলকেই যথাযথ পক্রিয়ায় দাওয়াত করেছি। কেন আসেননি বুঝতে পারছি না।