সরাইলের দেওড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মেয়াদ উত্তীর্ণ সভাপতির স্বাক্ষরে ৮২ হাজার টাকা উত্তোলন
মোহাম্মদ মাসুদ,সরাইল: সরাইলের দেওড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপণা পরিষদের মেয়াদ উচ্চ আদালতের আদেশে গত ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে শেষ হয়েছে। এডহক কমিটি গঠনের অনুমতি চেয়ে প্রধান শিক্ষক বোর্ডে আবেদন করে অনুমতিও পেয়েছেন। এরই মধ্যে আবার জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ বিলাত খাঁ। মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির স্বাক্ষরে গত ৭ জানুয়ারি ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ৮২ হাজার টাকা উত্তোলন করে ফেলেছেন তিনি। বিষয়টি গোপন রাখার জন্য এখন প্রাণপন চেষ্টা করছেন।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, কমিটির বিরুদ্ধে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মোহিত কুমার দেবের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১১ জানুয়ারি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পত্রে অযোগ্যতা অদক্ষতা ও স্বেচ্ছাচারিতা প্রমাণিত হওয়ায় ওই কমিটি বাতিল করে দেয় শিক্ষা বোর্ড। সেই সাথে প্রধান শিক্ষককে এডহক কমিটি গঠনের পরমর্শ দেয় শিক্ষা বোর্ড। কিন্তু প্রধান শিক্ষক এডহক কমিটি গঠনের পক্রিয়ায় না গিয়ে তৎকালীন কমিটিকে আইনি লড়াই করার সুযোগ করে দেন। বোর্ডের এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে একটি রীট পিটিশন (নং-৭৯২/২০১৮) দায়ের করেন সভাপতি আরমান মিয়া। রুল শুনানী সাপেক্ষে আদালত ১১/০১/২০১৮ এর আদেশের কার্যকারিতার উপর ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। অর্থাৎ ১৪ ডিসেম্বর থেকে এ কমিটির বেলায় বোর্ডের দেওয়া নির্দেশ বহাল থাকবে। নিয়ম মাফিক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে ব্যর্থ হওয়ায় এডহক কমিটি গঠনের পরামর্শ দেয় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। প্রধান শিক্ষক বোর্ডে আবেদন করে এডহক কমিটি গঠনের অনুমতি ও পেয়েছেন। পক্রিয়া চলছে। এখন বিদ্যালয়ে কোন কমিটি নেই। বিধি মোতাবেক এডহক কমিটি গঠনের পর্যন্ত নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরেই চলবে ব্যাংকের লেনদেন। এরই মধ্যে প্রধান শিক্ষক নির্বাহী কর্মকর্তার অজান্তে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতির স্বাক্ষরে গত ৭ জানুয়ারি সরাইল কৃষি ব্যাংক থেকে ৮২ হাজার টাকা উত্তোলন করে ফেলেছেন। সঞ্চয়ী হিসাব নং-২৪১০-০৩১১০৩৬৫৩৬, চেক নং-এসবিডি০০১৬৩৩৮। তড়িঘড়ি করে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতির স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলনের কারণ খুঁজছেন কর্তৃপক্ষ। ঠিক সেই সময়ে গত ৯ জানুয়ারি বুধবার বিদ্যালয়ের সরকারি বেতন ও বিল ভাউছারে ওই সভাপতির স্বাক্ষর নিয়ে প্রত্যয়নপত্র নিতে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যান প্রধান শিক্ষক। সভাপতির স্বাক্ষর দেখে ধরে বসেন শিক্ষা অফিস। প্রভিধান মালা অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ নির্বাহী কর্মর্তার স্বাক্ষরের জন্য প্রেরণ করেন। সকল কাগজপত্র নতুন ভাবে সংযুক্ত করে নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরে জনতা ব্যাংক সরাইল শাখা থেকে টাকা উত্তোলন করেন প্রধান শিক্ষক। যেহেতু সরকারি বিলে সভাপতির স্বাক্ষর কর্তৃপক্ষ গ্রহন করেননি। কৃষি ব্যাংকের ৮২ হাজার টাকা উত্তোলন করাও বৈধ হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালিদ জামিল খান বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতির (উচ্চ আদালতের আদেশেও মেয়াদ শেষ) স্বাক্ষরে আর্থিকসহ যেকোন কাজ অবৈধ।