সরকারি বিধি লঙ্গনের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত
শিক্ষক মনিজুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল থেকেঃসরাইলের দেওড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মনিজুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারি বিধি লঙ্গন করে বিএড এমএড প্রশিক্ষণ গ্রহন ও বেতন স্কেল বৃদ্ধি করে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ মাহবুব খানের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ তদন্ত হয়েছে। তিন পৃষ্টার তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে একমত পোষন করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে প্রেরন করেছেন ইউএনও।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দফতর ও অভিযোগ পত্র সূত্রে জানা যায়, সরাইল উপজেলার দেওড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (ইআইআইএন নম্বর-১০৩৪৭৬)। ১৯৮৪ সালের জানুয়ারী মাসে এ বিদ্যালয়ে জুনিয়র শিক্ষক পদে যোগদান করেন মনিজুর। ওই সময়ে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত। ২০০৫ সালে তিনি উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।
তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ফেব্রুয়ারী ২০০৯ থেকে ফেব্রুয়ারী ২০১০ শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি প্রাইম ইউনিভার্সিটি হতে বিএড প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। বিএড প্রশিক্ষণের বিষয়টি রহস্যজনক কারনে তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে গোপন রাখেন। ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ তিনি বিএড প্রশিক্ষণে ভর্তি হওয়ার অনুমতি চেয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিষদ ২৫/০৩/২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ তারিখের সভায় ০১/০৭/২০০৯ থেকে ৩০/০৬/২০১০ খ্রিঃ পর্যন্ত মনিজুরের বিএড প্রশিক্ষণের ছুটি মঞ্জুর করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ১৫/০৫/২০০৮ খ্রিঃ তারিখের ‘পরিপত্র’ স্মারক নং-শিম/শা:১১/১৯-২ (এমপিও)/২০০৭/৭৫৭ এর (১) নং সিদ্ধান্ত “ সরকারি এবং বেসরকারি মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠদান/ স্বীকৃতি প্রাপ্ত বিদ্যালয়ে কর্মরত বিএড বিহীন শিক্ষকগণকে সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বি.এড প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সরকারি পরিপত্র অমান্য করে কর্মরত এমপিও ভুক্ত শিক্ষক হওয়া সত্বেও সরকারি কোন টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে মনিজুর বিএড প্রশিক্ষণ গ্রহন করেননি। ওই সময়ের অবৈধ কমিটিকে দিয়ে রেজুলেশন অনুমোদন করে বেআইনি ভাবে বিএড স্কেল গ্রহন করেছেন। সম্পূর্ণ অবৈধ ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিএড স্কেল গ্রহন করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দিয়ে শিক্ষক মনিজুর আরেকটি জালিয়াতির মাধ্যমে একই শিক্ষাবর্ষে একই ইউনিভার্সিটি হতে এমএড প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন।
তদন্ত সাপেক্ষে এহেন অনিয়ম দূর্নীতি ও জালিয়াতির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করে সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ব্যবস্থাপনা পরিষদের সভাপতি। ইউএনও গত ৭ আগষ্ট ডকেট নং ১৭৭৬ মারফত বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সহিদ খালিদ জামিল খানকে। তদন্ত কর্মকর্তা গত ২৩ আগষ্ট রেকর্ডপত্র সহ সকলের লিখিত বক্তব্য গ্রহন করে পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন তৈরী করেন। পরে ৭ সেপ্টেম্বর ৩১৮ নং স্মারকে ওই প্রতিবেদন নির্বাহী কর্মকর্তার দফতরে প্রেরন করেন। তদন্তে অভিযোগের প্রত্যেকটি বিষয়ের সত্যতার প্রমাণ মিলে। ওই তদন্ত প্রতিবেদনের সাথে একমত পোষন করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় গ্রহনের জন্য নথিপত্র গত ২৪ সেপ্টেম্বর ৫২৯/১(৩) নং স্মারকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরাবর প্রেরন করেছেন ইউএনও।