Main Menu

মনে হচ্ছে বাবা হত্যার বিচার পাবো না, দু’বছর হলো…….

+100%-

মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল।আমাদের বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের বাবা আত্মহত্যা করতে পারে না। বাবাকে মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখেছে আসামীরা। আজ দুই বছর হলো এখন পর্যন্ত তদন্ত রিপোর্টটিই আদালতে জমা দেননি মামলার দায়িত্বে থাকা তদন্ত  কর্মকর্তারা। মনে হচ্ছে আমরা বাবা হত্যার বিচার পাবো না। অন্যদিকে আসামীরা মামলা তুলে নিতে আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বাবা হত্যার বিচার চাই।

মঙ্গলবার বাবা হত্যার বিচারের জন্য রাস্তায় প্লেকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে একথাগুলোই বলছিলেন নিহত আবুল কাশেমের সন্তানেরা।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বুধল ইউনিয়ন আনসার কমান্ডার আবুল কাশেম (৬০) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিসিক নন্দনপুর শিল্পনগরী আরশী মেটাল ইন্ডাস্ট্রিতে সিকিউরিটি গার্ড এর চাকুরী করতেন। আসামীরাও ওই ইন্ডাস্ট্রিতে চাকুরী করতো। আবুল কাশেম সৎ ও নিষ্ঠাবান হিসেবে দীর্ঘদিন যাবত ওই ফ্যাক্টরিতে চাকরি করে আসছেন । ফ্যাক্টরিতে কোন অন্যায় বা অবৈধ কাজ দেখলে প্রতিবাদ করতেন। এজন্য আসামিরা মারাত্মক ঈর্ষান্বিত হইয়া বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতিসহ হত্যার হুমকি দিতেন। তাদের হুমকির বিষয়গুলো বাড়িতে এসে পরিবারের কাছে বলতেন। তখন পরিবারের লোকজন চিন্তায় ছিলেন।

পরদিন গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে সকাল ছয়টার সময় ফ্যাক্টোরির পাশের জৈনিক আক্তারের খালি প্লট সংলগ্ন দেয়ালের বাহিরে রডের মধ্যে গলায় দড়ি প্যাচানো অবস্থায় ঝুলিয়ে থাকতে দেখে সেখানকার লোকজন। খবর পেয়ে আবুল কাশেমের স্ত্রী এবং ছেলেরা আবুল কাশেমের লাশ শনাক্ত করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ নিয়ে যায় ময়নাতদন্তের জন্য।

ঘটনার দুই দিন পর গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে আবুল কাশেমের ছেলে মো. রাসেল বাদী হয়ে তিন জন অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামী করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু আবুল কাশেম মৃত্যুর দুই বছর হলেও আজ পর্যন্ত মামলার তেমন কোনো ঊর্ধ্বগতি হয়নি। যার ফলে ন্যায় বিচারের হতাশা নিয়ে ঘুরছেন মৃত্যু আবুল কাশেমের পরিবারের লোকজন।

মামলার বাদী মৃত্যু আবুল কাশেমের ছেলে মো. রাসেল বলেন, আমার বাবা আত্মহত্যা করতে পারেনি। আমার বাবাকে মেরে ফেলছে। নন্দনপুরের করম আলীর ছেলে তুহিন আমার বাবাকে খুন করেছে। তার কাছে আমার বাবা টাকা পাওনা ছিল। টাকা চাইলেই তুহিন বাবাকে মেরে ফেলার হুমকি দিত। এমনকি মৃত্যুর আগের দিনও তার হুমকি বিষয়টি আমাদের কাছে বলছিলেন। আমরা তখন থেকেই চিন্তায় ছিলাম।

আপনার বাবাকে তুহিন খুন করে থাকলে তুহিনকে কেন আসামী করেননি এমন প্রশ্নের জবাবে মো. রাসেল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বার বার তুহিনের নাম বললেও মামলার এজাহারে তুহিনের নাম রাখতে দেননি তখনকার পুলিশ কর্মকর্তা। তুহিনকে সাথে নিয়ে তারা আমার বাবাকে খুন করেছে। তুহিন হচ্ছে আমার বাবা হত্যার মূলহোতা।আমার বাবা হত্যার পরদিন পুলিশ তুহিনকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে আদালতে চালান না দিয়ে পাঁচ ঘন্টা পর তুহিনকে ছেড়ে দেই। এটাই বড় রহস্য! মামলার এজাহার ৭/৮ বার পরিবর্তন করতে হয়েছে। এতো কিছুর পরও আশায় ছিলাল মামলাটি পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই) তে তদন্ত রয়েছেন। কিন্তু পিআইবিতে আজ তেইশ মাস মামলার কোন অগ্রগতি নেই। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিজান সাহেবের কাছে গেলে উনি আমাদেরকে পাত্তাই দেয় না। বাবা হত্যার ন্যায়বিচার পাবো কিনা এটা এখন ধোয়াশার ভিতর।

নিহতের স্ত্রী রিনা বেগম বলেন, স্বামীকে হারিয়ে ছেলেমেয়ে নিয়ে আমি বড় কষ্টে আছি। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধের পথে। তুহিনরা যেভাবে বলছিল সেভাবেই আমার স্বামীকে মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন আমি যেন আমার স্বামী হত্যার বিচার পাই।খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান  (পিবিআই) বলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্ত চলমান আছে।






Shares