ভোটের আগে প্রতিশ্রুতিই দিয়ে গেলেন জনপ্রতিনিধিরা
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল। ভোটের আগে প্রতিশ্রুতিই দিয়ে গেলেন জনপ্রতিনিধিরা , কিন্তু নির্বাচিত হয়ে কেউ কথা রাখে না। ভোটের আগে সবাই মুখে মুখে সবকিছু দিয়ে দেয়। ভোট শেষে তা আর মনে থাকে না। কিন্তু ভোটে পাশ করে গেলে আর সেই প্রতিশ্রুতি কেউ রাখেনা । দিন শেষে ফলাফল শূন্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার সরাইল অরুয়াইল সড়কের পাকশিমুল ইউনিয়নের ভূইশ্বর মধ্যপাড়া এলাকার মানুষের দুর্ভোগ যেন কমছে না। ভূইশ্বর মধ্যপাড়া সোলেমানের বাড়ির পূর্ব পাশের খালের উপর একটি ব্রীজ নির্মাণ করা ছিল স্থানীয়দের দীর্ঘ দিনের দাবি। ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে, কিন্তু সংযোগ সড়কের কোন নাম নেই। ২০১৭-২০১৮ সালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে ৩২ লক্ষ ৩৯ হাজার ৬ শত ৩৮ টাকা ব্যয়ে একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু আজ অব্দি এর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয় নি। এই এলাকায় রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা। প্রায় তিন হাজার লোকের যাতায়াত হয় প্রতিদিন এই পথ দিয়ে। কিন্তু ৩০০শত ফিট যায়গায় নেই কোন সংযোগ সড়ক, তাই স্থানীয়রা বর্ষা এলে পড়ে দুর্ভোগে।
স্থানীয়দের অভিযোগ অনেক জনপ্রতিনিধি তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা কথা রাখেনি। তাদের অভিযোগ নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা সবাই তাদের আশ্বাস দিয়ে যায় কিন্তু নির্বাচনের পরে সেইকথা তাদের মনে থাকে না। এখানে স্থানীয় ৫ বারের সাংসদ উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া কে তারা অনেক বার দাড় করিয়ে তাদের দুর্দশার কথা বলেছেন। তিনি তাদের আশ্বস্ত করে গিয়েছিলেন, আজও তার বাস্তবায়ন করেন নি। তিনি শুধু এলাকার মানুষকে আশ্বাস দিয়েই গেছেন। তাই তারা বাধ্য হয়ে প্রতিবছর বর্ষার সময় সবাই মিলে অর্থ সংগ্রহ করে সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত করে। এবছরও পারাপারের জন্য ৩০০ শত ফুট সাঁকোটি করতে প্রথমে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে নামে তারা। পরে সেইটা গিয়ে দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায়।
এছাড়াও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরাও নির্বাচনের আগে অনেক আশ্বাস দিয়ে যায় কিন্তু ফলশ্রুতিতে কিছুই পাওয়া যায় না তাদের কাছ থেকে।
ভূইশ্বর মধ্যপাড়া গ্রামের আবদুল হান্নান বলেন, আমরা প্রতি বছর নিজেদের অর্থায়নে চাঁদা তুলে পারাপারের জন্য ব্যবস্থা করে থাকি। এমপি, চেয়ারম্যানরা আমাদের কোন কাজ করে না। এমপি উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া কে তিন বার এখানে দাড় করিয়ে বলছি কিন্তু আজো সুফল মিলছে না। তিনি আরও বলেন, আমাদের চলাচলের জন্য মাটি ফেলে ভরাট করে দিলে আমদের সুবিধা হইতো। স্কুল, মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রীরাও যাতায়াত করতে সুবিধা হইতো।
স্থানীয় মোঃ নাজমুল হাসান নামে এক জন বলেন, এখানে গ্রামবাসির পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও এই পথ দিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু প্রতি বর্ষা সময় পানি বেড়ে গিয়ে যাতায়াতে সমস্যা হয়ে যায়। কিন্তু স্থানীয় সরকার বা কেউ আমাদের এই দুর্দশার জন্য এগিয়ে আসে না। আমরা এলাকা বাসী সবাই মিলে টাকা সংগ্রহ করে প্রতিবছর বাঁশ কাঠ দিয়ে একটি সাকো তৈরি করে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে থাকি। আমাদের সহায়তার জন্য কেউ এগিয়ে আসে না, সবাই আমাদের শুধু আশ্বাস দিয়ে যায়, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।