ডায়াবেটিক :: স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য সরাইল হাসপাতালের একটি অনুকরনীয় উদ্যোগ
উদ্যোগটি শুরুতে ছিল খুব ছোট, অতি স্বল্প সময়ের ব্যবধানে নেয়া। ২ সপ্তাহ বড়জোড়।
.
ডেস্ক ২৪:: উপজেলা সদরে আগত শত শত ডায়াবেটিক রোগী, অথচ বেশিরভাগই অসচেতন। ডায়াবেটিসের চিকিৎসাও খরচ সাপেক্ষ।
অনিয়মিত ঔষধ, দীর্ঘদিন আনকন্ট্রোল্ড ব্লাড সুগার, ইনসুলিন ভীতি, রসনা বিলাস, ব্যায়াম বিমুখতা একসময় মৃত্যু ডেকে আনে। শুধু ঔষধই যথেষ্ট নয়। ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে হলে যে জানতেই হবে। তাই সচেতনতা বাড়াতে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরাইল উপজেলা হাসপাতালে হত ১৪ জুন হাতে নেয়া হল এক অনবদ্য সেমিনারের।
সম্পূর্ণ চিকিৎসকদের নিজেদের উদ্যোগে, নিজস্ব অর্থায়নে। রোযার মাস, সওয়াবের নিয়তে। সিদ্ধান্ত হলো দুটো প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে, ডা: মুহিব্বুর রহমান রাফে করবেন ডায়াবেটিস: কি, কেন ও কিভাবে? এবং ডা: এইচ এম মশিউর রহমান করবেন রমযান ও ডায়াবেটিস বিষয়ে। প্রেজেন্টেশন হবে সাধারন, সহজবোধ্য বাংলা ভাষায়। সাথে ১০০জন ডায়াবেটিক রোগীকে গ্লুকোমিটারে ফ্রি ব্লাড সুগার পরীক্ষা করা হবে।
ব্যাস! সকলে একসাথে নেমে পড়া।
টিকেট করে বিতরন করা হলো, দাওয়াত দেয়া হলো। ভলান্টিয়ার আর গ্লুকোমিটার ম্যানেজ হলো।
তারপর~~~~~
দুপুর ১২টার প্রোগ্রাম, ১১টা থেকেই হাসপাতাল অডিটোরিয়াম বুকড। হল ভর্তি মানুষ উপচে পাশের বারান্দায়।
একরাশ শুভকামনা নিয়ে এলেন সিভিল সার্জন ডা হাসিনা বেগম, উপজেলা নিবাহী কর্মকতা সৈয়দা নাহিদা হাবিবা, UHFPO ডা হাসিনা আখতার বেগম, MOCS ডা আ: কাদের নোমান, সাংবাদিক সমাজ, কনসাল্টেন্ট, মেডিকেল অফিসারবৃন্দ আর শতাধিক ডায়াবেটিক রোগি, যাদের অর্ধেকই ছিলেন মহিলা। শেষ অবধি থাকলেন; মনোযোগী ছাত্র ছাত্রীর মতো।
সমাপ্তিটাও হলো সুন্দরভাবে।
ডায়াবেটিক রোগিদের রেজিস্ট্রেশন করা হলো আগামীতে রেটিনোপ্যাথি স্ক্রিনিং এর জন্য। উল্লেখ্য ডায়াবেটিক রোগীদের চক্ষু পরীক্ষার জন্য অত্র হাসপাতালে রবিবার ও মঙ্গলবার চক্ষু পরীক্ষা করা হয়।
.
পুরোটি প্রোগ্রামের কনসেপ্ট ডিজাইন ও বাস্তবায়নের নেপথ্যে ছিলেন হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের রেসিডেন্ট ডা: মুহিব্বুর রহমান রাফে। তিনি বলেন, এই আয়োজনে প্রাপ্তি অনেক। মানুষের দোয়া, শুভকামনা, কনফিডেন্স, মানসিক তৃপ্তি। মানুষের জন্য কিছু একটা তো করা হলো। এই আয়োজন প্রমাণ করেছে, ভালো কাজে এখনও সুহৃদ পাওয়া যায়। জোটে অকুন্ঠ সহযোগিতা, শুভকামনা।”
উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা হাসিনা আখতার বেগম বলেন, ইতোমধ্যে সরাইল হাসপাতাল সেবার দিক থেকে একটি অনুকরনীয় পর্যায়ে পৌছাবার চেষ্টা করছে এবং আরও ভালো করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এ সেমিনার অন্যান্য উপজেলার জন্য একটি অনুকরনীয় উদ্যোগ হতে পারে। ভবিষ্যতে হাইপারটেনশন, স্ট্রোক, কোমর ব্যথা নিয়ে আরও বড় আকারে এ ধরনের সেমিনার আয়োজন করা হবে।
আপনার যদি সহযোগী সিনিয়র থাকে, থাকে কিছু উদ্যোমী সুন্দর মনের কলিগ আর সুসম্পর্কে বাঁধা অনুগত অধস্তন। তার সাথে কিছু করার অদম্য ইচ্ছা ও একটা সুন্দর প্ল্যান। আমাদের বিশ্বাস, সবকিছুই করা সম্ভব।
হতে পারে সেটি ছোট, তবে সাহস করে শুরু করাটাই আসল। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।