ইউপি নির্বাচন :: সরাইল আ’লীগের আহবায়ক কমিটির সভায় বক্তারা “নৌকা দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী, ইজ্জত রক্ষা করুন”
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল থেকে :: ভোট গ্রহন এখনো হয়নি। বাকী আরো ২১ দিন। ইতিমধ্যে সরাইলের সকল ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থীকে পাশ করানোর জোর আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
কেউ ফেল করতে পারে এমনটি বলেননি কোন বক্তাই। তবে ৬-৭ জন প্রার্থীর কর্মকান্ডে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৃণমূলের নেতারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আ’লীগের আহবায়ক কমিটির এক সদস্য বলেন, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আ’লীগের ২/১ জন পাস করতে পারে। এক সময় ইউনিয়ন আ’লীগ পরিচয়দানকারী জনৈক নেতাকে বিএনপি’র লোক বলে চিৎকার করতে থাকেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট আশরাফ উদ্দিন মন্তু।
বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষনাও দেয়া হয় সভায়। গত শুক্রবার রাতে সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে আহবায়ক নাজমুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচনপূর্ব এ বর্ধিত সভা।
দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, অরুয়াইল ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি আবু তালেব নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পাশ করানোর সর্বাত্বক প্রচেষ্টার ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, সমস্যা হচ্ছে বিদ্রোহী প্রার্থী। তার চেয়ে বড় সমস্যা হল শুধু রানিদিয়া গ্রাম থেকে বড় দুইদলের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। নোয়াগাঁও ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা হামিদুল হক বলেন, সবকিছু ভুলে যান। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম নৌকা দিয়েছেন। উনার ইজ্জত রক্ষা করুন। একই ইউনিয়নের শফিকুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, দলের মনোনিত প্রার্থী আমাকে এ সভার দাওয়াতই দেননি। দলীয় কাউকে কিছু বলছেনও না। উনার নির্বাচন আমরা করতে পারব না।
শাহজাদাপুর ইউনিয়নের প্রার্থী শহিদুজ্জামান তীর ছুড়েন জাতীয় পার্টির প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম খাদেমের দিকে। তিনি অভিযোগ করেন সিরাজুল ইসলাম সেখানকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে প্রচার করছেন “ লাঙ্গলে ভোট দিলেই নৌকা পাবে। নৌকার প্রার্থীকে দল থেকে ১৫ লাখ টাকা দিয়েছে।” টাকার কথা শুনে লোকজন আমাকে যন্ত্রনা দিচ্ছে। মনোনয়ন পাওয়ার পর এখনো তিনি দলীয় সভা করেননি। তবে পাশ করার বিষয়ে তিনি যথেষ্ট আশাবাদী।
শাহবাজপুর ইউনিয়নের আ’লীগের প্রার্থী খায়রুল হুদা চৌধুরী ও সম্পাদক নুরুল ইসলাম কালন অবাধ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে শতভাগ জয় লাভের আশ্বাস দিয়ে বলেন, প্রতিপক্ষ আমাদের সমর্থন বেশী এমন কয়েকটি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায় আনার চেষ্টা করছে। যাতে করে প্রশাসনের দৌড়ঝাঁপ দেখে আমার ভোটাররা বাড়ি চলে যায়।
এখনো দলীয় সভা করেননি চুন্টা ইউনিয়নের প্রার্থী শাহজাহান মিয়া। এ্যাডভোকেট সমর ভৌমিক ও শাহজাহান মিয়া জয়লাভের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী শেখ হাবিবুর রহমান দলের সিদ্ধান্ত না মানলে তার বিরুদ্ধে দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে।
পানিশ্বর ইউনিয়ন আ’লীগের সম্পাদকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতৃবৃন্দ। প্রার্থী দ্বীন ইসলাম ও সম্পাদক মোঃ আমজাদ হোসেন বলেন, গ্রুপিং, দূরত্ব ও ক্ষোভ ভুলে গিয়ে সকলে ঐক্যমতের ভিত্তিতে কাজ করলে জয় আমাদের নিশ্চিত।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আ’লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম আহবায়ক-১ উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদ, এ্যাডভোকেট আবদুর রাশেদ, খায়রুল হুদা চৌধুরী, সদস্য ফরহাদ রহমান মাক্কি, বিধান সরকার ও এ্যাডভোকেট জয়নাল উদ্দিন প্রমূখ।
নেতৃবৃন্দ আগামী ৭ মার্চের মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন। সবকিছু ভুলে নৌকা তথা আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে মাঠে ময়দানে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের দলীয় নেতাকর্মীদের।