সদর মডেল থানার উদ্যোগে শান্তি সমাবেশ :: ধুবলার ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার হবে_বক্তারা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের দুবলা গ্রামে শান্তি ফিরিয়ে আনতে শনিবার সদর মডেল থানা পুলিশের উদ্যোগে বাসুদেব উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শান্তি সমাবেশ হয়েছে।
বাসুদেব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোবাশ্বের আলম ভূইয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: ইকবাল হোসাইন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম,ভাইস চেয়ারম্যান মো: মহসিন,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত,জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা ইসহাক ভূইয়া,সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম দুলাল,সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নবীর হোসেন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক তোফা মোল্লা, স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন,সাবেক ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
সভা পরিচালনা করেন আওয়ামীলীগ নেতা মো: শাহনেওয়াজ।
সভায় প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিগন তাদের বক্তৃতায় এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যে সবার প্রতি আহবান জানান। তারা দুবলার ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করারও আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, একটি মাজারকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের বাসুদেব ইউনিয়নের দুবলা গ্রামের অর্ধশত ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। গত ২৪ শে জুন সকালে কয়েক ঘন্টা ধরে দুবলা গ্রামের একটি পক্ষের বাড়িঘরে এ তান্ডব চালানো হয়। এ ঘটনায় নারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। পাকা বাড়ির দেয়াল ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে চালানো হয় ভাংচুর লুটপাট। রাহাত মিয়া ও রিপন মিয়ার দোতলা বাড়ির সবকিছু ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়। এ দুটি ঘরের আসবাবপত্র,টিভি-ফ্রিজ কোন কিছুই আস্ত রাখা হয়নি। লুটপাট করে নেয়া হয় নগদ টাকা,স্বর্নালংকারসহ দামী জিনিসপত্র। এ দুটি বাড়ির দেয়াল ভেঙ্গে হামলাকারীরা ভেতরে প্রবেশ করে।
এছাড়াও দুবলা গ্রামের দানু মিয়া,বাদল মিয়া,ওহাব মিয়া,রহিম মিয়া,নান্নু মিয়া,আনিছ মিয়া,মুসলিম মিয়া,রমজান মিয়া,রুমন মিয়া,মুরশিদ মিয়া,মাসুম চৌধুরী,নোমান মিয়া,তাজু মিয়া,উজ্জল মিয়ার বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙ্গচুর চালানো হয়। ওইদিন দু-আড়াইশো লোক রামদা,বল্লম,হাতুড়ি নিয়ে হামলা চালায়। রৌফ মিয়া,আলমগীর মিয়া,মামুন মেম্বার,শাকিল মেম্বার,জসিম মিয়া ও মানিক মিয়া এ হামলার নেতৃত্ব দেন।
দুবলা গ্রামের আবদুল আওয়াল শাহ্ মাজারে অশ্লীল কর্মকান্ড নিয়ে সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল্লাহ্ আল মামুনের সাথে একই গ্রামের রাহাত মিয়ার বিরোধ দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি মাজারের ওরসে গান-বাজনা করতে নিষেধ করায় মামুনের সাথে রাহাতের বাক-বিতন্ডা হয়। এ নিয়ে গত ২৫ মে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে জামাল মিয়া নামে মামুনের এক সমর্থক নিহত হন। এ ঘটনায় সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে অনেকটা পুরুষশূণ্য হয়ে পড়ে দুবলা গ্রাম। স্থানীয় দুবলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন নিয়েও মামুন ও রাহাত সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এসব বিরোধের জের ধরেই ২৪শে জুন সকাল ৭টা থেকে মামুনের কয়েকশ সমর্থক রাহাত সমর্থকদের ঘর-বাড়িতে হামলা চালায়।