শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সুন্দর দেশের স্বপ্ন পূরনে সবাইকে কাজ করতে হবে:: ১২ ছাত্রলীগনেতার পঞ্চম মৃত্যু বার্ষিকীতে মোকতাদির চৌধুরী এমপি
শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ব্যপক কর্মসূচির মাধ্যমে আজ বৃহস্পতিবার সকালে পালন করা হয় মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ১২জন ছাত্রলীগ নেতার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় শোক র্যালী, পূস্পস্তবক অর্পন, স্মৃতি চারণ, শীতবস্ত্র বিতরণ ও দোয়া মাহফিল কর্মসূচি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নিহতদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতি স্তম্ভে পূস্পস্তবক অর্পন করেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। অন্যান্যের মধ্যে পূষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি, পৌর মেয়র মোঃ হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার সহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ, শহর আওয়ামীলীগ, জেলা যুবলীগ, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগ, জেলা স্বেচ্ছা সেবকলীগ, জেলা কৃষকলীগ, জেলা ছাত্রলীগ এবং জেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এর আগে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ মাসুম বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাসেল মিয়ার নেতৃত্বে একটি শোক র্যালী সরকারী কলেজ মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মঠের গোড়ায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতি স্তম্ভে এসে শেষ হয়।
পূষ্পস্তবক অপর্ণ শেষে এক সংক্ষিপ্ত বক্তিতায় উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, এই দূর্ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক, দুঃখজনক, হৃদয় বিদারক। দূর্ঘটনায় আমরা হারিয়েছি ১২জন তাজা তরুন প্রাণ ও জেলার শ্রেষ্ট সন্তানদের। তাদের শোক আমরা কোনদিন ও ভুলতে পারবো না। তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। কিন্তূ যে ক্ষতি তাদের এবং আমাদের হয়েছে, তা চিরদিন অপূরনীয় হয়ে থাকবে।
আবেগ আপ্লুত কন্ঠে মোকতাদির চৌধূরী এমপি আরো বলেন, নিহতরা আমার সফর সঙ্গী হয়ে ফেরার পথে এক্সিসিডেন্টে মৃত্যু বরণ করছে। তাই আমার কাছে সেই বেদনা অত্যন্ত কষ্ট দায়ক। আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। বক্তব্যে তিনি আরো বলেন নিহত ছাত্রনেতারা সবাই মেধাবী ছিল, সমাজে তারা ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিল। তারা বেঁচে থাকলে একদিন হয়তো ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে পারতো। ভালো রাজনীতিবিদ হতে পারতো। চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বানিজ্য করে ভালো মানুষ হয়ে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে পারতো। তারা একটি সুন্দর দেশের স্বপ্ন দেখতো। তাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তাদের শূন্যতা বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের পুরণ করতে হবে। অনুষ্ঠানে নিহত ছাত্রলীগনেতাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওঃ মোঃ আব্দুল্লাহ।
পরে গরিব অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বীতরণ করা হয়। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ প্রশাসক, এডঃ সৈয়দ এ.কে.এম.এমদাদুল বারী, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শাহ আলম সরকার, প্রচার সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক আলহাজ মোঃ শাহ আলম, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি হাবিবুল্লাহ বাহার, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভুইয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ মুসলিম মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মহসিন মিয়া, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এড. তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত, শহর আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ জামাল খান, জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. শাহনুর ইসলাম, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি ছাদেকুর রহমান শরীফ, জেলা স্বেচ্ছা সেবকলীগের সভাপতি এড. লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এম.সাইদুজ্জামান আরিফ, সদর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মোঃ আলী আজম, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ মাসুম বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাসেল মিয়া, দূর্ঘটনা কবলিত গাড়িতে থাকা বেঁচে যাওয়া এক মাত্র ছাত্রলীগ নেতা, বর্তমান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সদস্য মোঃ পাবেল আহমেদ সহ জেলা ছাত্রলীগ ও জেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন শাখা সংগঠনের নেতা-কর্মীবৃন্দ।
উলেখ্য ২০১১ সালের উপ নির্বাচনে বিজয় লাভ করারপর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে টুঙ্গীপাড়া যান। সে দিন তাঁর সফর সঙ্গী হয়েছিলেন জেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা কর্মীগণ। মাজার জিয়ারত শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফেরার পথে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় মর্মান্তিক এক দূর্ঘটনায় শিকার হয় ছাত্রনেতাদের বহনকারি একটি গাড়ি। ঘটনা স্থলেই গাড়ি চালক সহ নিহত হন আট জন ছাত্র নেতা। হাসপাতালে নেওয়ার পর নিহত হন আরো চারজন। নিহত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন শান্ত, বাবু, লিয়েন, রুমেল, রায়হান, আলমগীর, তানভীর, রিয়াদ, মুরশেদ, আসিফ, এমরান, যুব নেতা ও গাড়ি চালক মিজান। এদিন বাদ আসর শহর কয়েকটি মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ।