মাদরাসা ছাত্রের মৃত্যু : বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, শহরে ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন



নিজস্ব প্রতিবেদক:: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোবাইল কেনাকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসা ছাত্র ও ব্যাবসায়ী – ছাত্রলীগের মধ্যে গত সোমবার রাতের চার ঘন্টা ব্যাপী ত্রিমুখী সংঘষের্র ঘটনায় এক মাদ্রাসা ছাত্র নিহত হয়েছে। নিহতের নাম হাফেজ মাসুদুর রহমান (১৮)। মঙ্গলবার ভোরে জেলা সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নিহত মাসুদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের ভাদুঘর এলাকার হাফেজ ইলিয়াস মিয়ার ছেলে। তিনি শহরের কান্দিপাড়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তার সহপাঠীদের অভিযোগ, গত রাতে পুলিশ তালা ভেঙ্গে মাদ্রাসার প্রবেশ করে ছাত্রদের উপর হামলা করে। এসময় পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েক জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত হাফেজ মাসুদুর রহমানকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সকালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
পুলিশ এক মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে । এই ঘটনায় শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সকালে ছাত্ররা বিক্ষোভ করে হরতাল ঘোষনা করে।
এদিকে মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন হাজারো বিক্ষুব্ধ মাদরাসা ছাত্র। মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে দু’দফায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর এবং রেললাইনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একদল মাদরাসা ছাত্র অতর্কিতভাবে রেলওয়ে স্টেশনে এসে হামলা চালায়। এ সময় বিক্ষুব্ধরা স্টেশনের এক নম্বর প্লাটফরমের দরজা-জানালা, স্টেশন মাস্টারের কক্ষ, প্যানেল বোর্ড ও টেলিফোন, চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার পর থেকেই ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ভোর থেকেই ছাত্ররা শহরের টিএ রোড হাসপাতাল রোড় বন্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে। ব্যাংক এশিয়া সহ বিভিন্র স্হানে ভাংচুর করা হয়।
শহরে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে টায়ারে আগুন জালিয়ে বিক্ষেভ করছে ছাত্ররা।
দুপুরের দিকে মাদ্রাসা ছাত্ররা স্হানীয় সাংসদ ও আওয়ামী লীগ অফিসে ভাংচুর করে ও অগ্নি সংযোগ করে। এরপর বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে।
জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাও. মোবারকউল্লাহ জানান, সামগ্রিক পরিস্হিতি নিয়ে আমরা বৈঠক করেছি। বৈঠক থেকে তিন পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহর দাবি করা হয়। এ রিপোর্ট লিখার সময় পর্যন্ত শহরে থমথমে অবস্হা বিরাজ করছে।
১২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ নজরুল ইসলাম, পিবিজিএম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে শহরে চার প্লাটুন বিজিবি সহ র্যাব, পুলিশ মোতায়ন রয়েছে।
গত রাতের ঘটনায় পুলিশ মাদ্রাসা ছাত্রসহ শতাধিক লোক আহত হয়েছে। ৪ ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে অন্তত ৫শ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে পুলিশ।