ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ ফাঁড়িতে যুবককে নির্যাতন, ওসি বললেন-চড়-থাপ্পর
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরে নির্যাতনের শিকার হয়েছে জাবেদ মিয়া (২৮) নামে এক যুবক। প্রায় ঘন্টাব্যাপী তাকে মারধোর করে ওই ফাঁড়ির দুই এসআই মজিবুর রহমান ও আশরাফ। জাবেদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে সে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: সেলিম উদ্দিন ওই দুই দারোগা জাবেদকে চড়থাপ্পর দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
জানা যায়, বুধবার দুপুরে শহরের পুরাতন কারাগারাস্থ ১নং পুলিশ ফাঁড়িতে ফোনে জাবেদকে ডেকে নিয়ে যান ওই দুই দারোগা। এরপর ফাঁড়ির ভেতরের একটি কক্ষে আটকে এসআই মুুুজিবুর রহমান ও আশরাফ তাকে লাঠিপেটা করতে শুরু করেন। পাশাপাশি লাথি মারতে থাকেন তারা। তাদের সঙ্গে মুক্তা নামে এক তরুনীও মারধোর করে তাকে। তবে এসআই মজিবুর রহমানের দাবী এক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার জাবেদ জেলার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ গ্রামের জজ মিয়ার ছেলে। বর্তমানে সে শহরতলীর ঘাটুরায় শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করে।
জাবেদ মিয়া জানান, শহরের তিতাস পাড়ার মুক্তা নামে এক নারী প্রায় সময় তাকে উত্যক্ত করতো। বাড়ি থেকে বের হলেই তাকে পথরোধ করে টাকা চাইতো। বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিতো। হামলা-মামলার ভয় দেখাত। নানা ভাবে ব্লেকমেইল করে মুক্তা তার কাছ থেকে অনেকবার টাকা নিয়েছে। বুধবার দুপুরে মেড্ডা শশ্মান ঘাটের সামনে তাকে দেখে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে আরো কয়েকজনকে নিয়ে মারধর করে চলে যায়। এরপর পুলিশ দিয়ে ফোন করে আমাকে ফাঁড়িতে ডেকে আনে। পরে পুলিশের সাথে যোগসাজস করে আমার উপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এসআই মুজিবুর ও আশরাফ আমাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। নিচে ফেলে পা দিয়ে লাথি মারতে থাকে। পরে পুলিশের সামনে মুক্তা ও তার বোন আমাকে মারধর করে। অবশেষে আমাকে হুমকি দিয়ে ফাঁড়ি থেকে বের করে দেই। পরে আমি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করি। আমি এসআই মুজিবুর ও আশরাফ এবং মুক্তার বিচার চাই।
জাবেদের মা সখিনা বেগম জানান, অনেক আগে মুক্তার পরিবার জাবেদের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলো। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় প্রায় সময় আমার ছেলেকে সে গুন্ডা নিয়ে মারধোর করতো। ২০ /৪০ হাজার টাকা দিতে বলতো। বুধবার সে পুলিশরে নিয়ে আমার ছেলেকে মারধোর করছে। এসময় হের ফোন বন্ধ করে রাখে। এরআগের দিনও আমার ছেলেকে মারধোর করে।
১নং পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুজিবুর রহমান বলেন, সে মেয়েকে উত্যক্ত করতো। এই বিষয়ে ওসি সাহেবের কাছে সে অভিযোগ দেয়। তবে মারধোরের অভিযোগ অস্বীকার করেন মুজিবুর। জাবেদের অভিযোগ পেয়ে ওসি সাহেব তাদের ডেকেছিলো বলে জানান তিনি। আরো বলেন-আমি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেছি যা হইবার হইছে। সে একটু পাগলা টাইপের।
ব্রহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ওই দুই দারোগা আমার কাছে চর থাপ্পর দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তারা আমাকে বলেছে সালিশ করার জন্য ডেকে ছিলো তাকে। আমি তাদের বলেছি তোমরা সালিশ করবার কে? মারধোর করা ঠিক হয়নি।