ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে যে কারণে স্বতন্ত্রে মজেনি আওয়ামী লীগ
নাসিরনগর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ সৈয়দ একে একরামুজ্জামানের নির্বাচন করছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনেও একই অবস্থা। নৌকার প্রার্থী সরে যাওয়ার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী কলারছড়ি প্রতীকের মো. মঈন উদ্দিনের সঙ্গেই ভিড়েছেন দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। নবীনগরে (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫) আসনে দলেরই এক স্বতন্ত্র প্রার্থী মমিনুল হক সাঈদ রোববার নৌকার ফয়জুর রহমান বাদলকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। তবে ব্যতিক্রম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনে। আওয়ামী লীগের কাউকে টানতে পারেননি স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান ওলিও। অবশ্য এর কারণও আছে।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং এই আসনের দলীয় প্রার্থী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি জানান, তার এখানে আওয়ামী লীগের কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। অনেক জায়গায় আওয়ামী লীগের লোকেরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যিনি পরিচিত তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগ বলে পরিচয় দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু উনি এর আগে যে স্বতন্ত্র নির্বাচন করেছিলেন তখন আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি। সুতরাং তিনি আর আওয়ামী লীগে নেই। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু বলেন- এখানে আওয়ামী লীগ আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং ঐক্যবদ্ধ।
এর আগে ২০১৯ সালের ৩১শে মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন ফিরোজুর রহমান। ওই নির্বাচনের পর থেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় তার। নির্বাচনের দু’দিন পর ২রা এপ্রিল বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগ। গাছের টুকরো ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তখন অভিযোগ করেন, ওই নির্বাচনের আগের দিন রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউজে তৎকালীন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নানের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন ফিরোজুর রহমান। ওই বৈঠকের পরই নির্বাচনের পরিবেশ অন্যরূপ ধারণ করে। প্রশাসন আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর। বিভিন্নস্থানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মারধর করা হয়। নির্বাচনের আগের রাত থেকে বিভিন্নস্থানে নৌকার অফিসে ঢুকে দলের নেতাকর্মীদের মারধর করে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বাধীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমনকি নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়েও হুমকি-ধমকি দেয়। ওই নির্বাচনে ওলিও’র বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে প্রশাসন কিনে নেয়ার অভিযোগ করে ছাত্রলীগ। এবারো তার টাকার কারণে নির্বাচনের সুষ্ঠুু পরিবেশ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। তবে ওলিও তার প্রধান নির্বাচনী অফিসে আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের ছবি টাঙিয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে আল মামুন সরকারের জন্যে দোয়ার আয়োজন করেন ওলিও। সেটিতেও যোগ দেননি তার পরিষদে থাকা চেয়ারম্যানরা।