বিরোধ সীমানার, মামলা মারধর-চুরির:: সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার দাপট!
বিশেষ প্রতিবেদক:: : ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্ব পাইকপাড়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি প্রদীপ চন্দ্র সাহা (৪৫) কে তার প্রতিবেশী অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ কর্মকর্তা মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অমরেন্দ্র লাল রায় নামের ওই কর্মকর্তার দায়ের করা মামলায় প্রদীপ বিনা দোষে গত ১৬ দিন ধরে কারাগারে বন্দী রয়েছেন। বাড়ির সীমানা নির্ধারণ নিয়ে প্রদীপের সঙ্গে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরোধ চলছিল।
প্রদীপের স্ত্রী দীপ্তি সাহা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা জানান, অমরেন্দ্র লাল রায় তাদের লাগোয়া বাড়ির বাসিন্দা। তাদের একতলা বাড়িটি দোতলাকরণের কাজ চলছে। এজন্য ছাদে পিলার নির্মাণ করা হয়। কিন্তু প্রতিবেশী অমরেন্দ্র তাদের কাছে জায়গা পান এমন দাবি তুলে পিলার ভেঙ্গে ফেলার চাপ দিচ্ছেন। এ অবস্থায় তারা স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এভাবে কিছুদিন অতিবাহিতের পর অমরেন্দ্র একটি মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে প্রদীপের বিরুদ্ধে গত ১৪ মার্চ সদর থানায় মামলা ঢুকে দেন। মামলায় প্রদীপ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়।
সদর থানায় দায়ের করা মামলায় বলা হয়, প্রদীপ চন্দ্র সাহা কয়েকজন সহযোগি নিয়ে বেআইনিভাবে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় ঢুকে তার ছেলে অনুপম রায়কে দা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে এবং ডান পায়ে আঘাত করে হাড় ভেঙ্গে ফেলে। এছাড়া তার কাছ থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে আহত অনুপমকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
প্রদীপের স্ত্রী দীপ্তি সাহার দাবি, মামলায় উল্লিখিত ঘটনাটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। প্রতিবেশী অমরেন্দ্র পুলিশের লোক হওয়ায় এমন একটি মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে থানায় মামলা দিয়ে গত ২৪ মার্চ প্রদীপকে গ্রেপ্তার করান। এছাড়া তার ছেলে অভিজিৎ রায় সরকারি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হওয়ায় অনুপমকে আহত দেখিয়ে মনগড়া চিকিৎসা সনদ পাইয়ে দেন। তাদের বাড়ির জায়গা দখলে নিতেই প্রদীপকে এমনভাবে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন দীপ্তি। বলেন, মামলায় অমরেন্দ্র লাল রায়ের যে ছেলেকে (অনুপম) আহত দেখানো হয়েছে সে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় দিব্যি এলাকায় চলাফেরা করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদি অমরেন্দ্র লাল রায় বলেন, আমার সঙ্গে প্রদীপের বিরোধ চলছে ঠিকই। তবে মামলায় উল্লিখিত ঘটনা সঠিক। মিথ্যা মামলার অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে তিনি বলেন, বিভিন্ন অভিযোগ থাকতে পারে, কিন্তু এটা যেহেতেু একটা মামলা, তার তদন্ত হচ্ছে। পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিজের ও চিকিৎসক হিসেবে ছেলের প্রভাব খাটানোর বিষয়ে তিনি বলেন, আমার ছেলে এখন আর সদর হাসপাতালে নেই।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মঈনুর রহমান মামলাটিতে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি একটু বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশে তো মামলা মোকদ্দমা হলে কিছুটা বাড়িয়ে বলা হয়। এতে আরও অনেক কিছু বাড়ানো ছিল, আমি এগুলো মামলায় উল্লেখ করতে দেই নাই।