বণাঢ্য আয়োজনে বিয়ে হল হাবিবার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি শিশু পরিবারেরসেই হাবিবা আক্তারের বিয়ে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে হাবিবার বাবার ভূমিকায় থাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানের উপস্থিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বর কসবা উপজেলার সোনাগাঁ গ্রামের বাসিন্দা, সদ্য চাকরিতে যোগ দেওয়া পুলিশ কনস্টেবল মো. জাকারিয়া আলম।
বিয়ের দেনমোহর নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ১ হাজার টাকা।
এর আগে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে বরযাত্রী নিয়ে শিশু পরিবারে হাজির হন বর জাকারিয়া। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত ও শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক রওশন আরা বেগম বরকে বরণ করে নেন। হাবিবা-জাকারিয়ার আলোচিত এ বিয়েতে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণি-পেশার তিন শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশ সুপারের সরকারি বাংলো থেকে হাবিবাকে তার বর জাকারিয়ার হাতে তুলে দেবেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী ফারহানা রহমান। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় শিশু পরিবার ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল হাবিবার। কিন্তু মায়া কাটাতে পারেনি হাবিবা। তাই তো ১০ বছর এই শিশু পরিবারের কাটানো সময়ে স্মৃতি কাটিয়ে মামা-মামির কাছে ফিরে যাওয়া হয়নি তার। পরে হাবিবার পুনর্বাসনের চেষ্টা গিয়ে গড়ায় বিয়েতে।
হাবিবার বাবা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানও মেয়ের বিয়েতে কোনও ঘাটতি রাখেননি। বিয়ের অনুষ্ঠানে পূর্ণতা দিতে তার সঙ্গে ব্যস্ত সময় কাটান শিশু পরিবারের সঙ্গে যুক্ত শহর সমাজসেবা প্রকল্পের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার।
আয়োজকরা জানান, হাবিবার বিয়েতে যতটা সম্ভব আয়োজনের চেষ্টা করা হয়। অতিথিদের আমন্ত্রণ জানাতে বিলি করা হয়েছিল বিয়ের কার্ড। বরযাত্রীসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের আট পদের খাবার পরিবেশন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে পোলাও, মুরগির রোস্ট, টিকিয়া, গরুর মাংস, সবজি, ডাল, সালাদ ও মিষ্টি।
হাবিবার দায়িত্ব নেওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, ‘শিশু পরিবার ছেড়ে দিতে হবে ভেবে হাবিবা অনিশ্চয়তায় ভুগছিল। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম হাবিবার জন্য চাকরির ব্যবস্থা করবো। কিন্তু সেটা তো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই ভালো পাত্রের সঙ্গে তাকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘আমি শুধু নই, আমরা সবাই মিলে হাবিবার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি ভবিষ্যতেও হাবিবার মতো আরও অন্যদের পাশেও আমরা দাঁড়াতে পারবো।’