ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বন্যার্তদের সাহায্যার্থে মানবিক আহবানে ব্যাপক সাড়া
কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে যাচ্ছে ১০ হাজার প্যাকেট ত্রান সামগ্রী
সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতি ব্যপকভাবে অবনতি হয়েছে। প্রবল বন্যায় এবার প্রভাব পড়েছে সারা দেশে । বন্যা দুর্গতদের কষ্ট যা আমাদের অনুভূতিতে আঘাত হানে । আমরা আমাদের অবস্থান থেকে বন্যায় দুর্গত মানুষের পাশে থাকায় ইচ্ছা পোষণ করি। আমাদের একটু সহযোগিতা হতে পারে বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে হাসি ফুটানো এই মানবিক আহবানকে সামনে নিয়ে জনাব মোঃ মিজানুর রহমান, পিপিএম(বার), পুলিশ সুপার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতিত্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বন্যা দূর্গতদের সাহায্যার্থে গত ২১/০৮/২০১৭খ্রিঃ এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সর্ব্বসম্মতিক্রমে পুলিশ সুপার, ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে আহ্Ÿায়ক এবং জনাব আল-মামুন সরকার, সাধারন সম্পাদক, জেলা আওয়ামীলীগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে সদস্য সচিব মনোনীত করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২২/০৮/২০১৭খ্রিঃ পৌর আধুনিক সুপার মার্কেট এর সামনে ত্রান তহবিল/পন্য-সামগ্রী গ্রহনের লক্ষে একটি অস্থায়ী ত্রান-সামগ্রী গ্রহণ বুথ খোলা হয়। পাশাপাশি নগদ অর্থ, নতুন কাপড়, শুকনো খাবার, ঔষধ, খাবার স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানি দ্বারা সহযোগিতা করে এবং বন্যা দূর্গতদের পাশে দাঁড়াই শ্লোগান উল্লেখপূর্বক একটি মানবিক আহবান সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করা হয়। ২১/০৮/২০১৭খ্রিঃ হতে ০৪/০৯/২০১৭খ্রিঃ পর্যন্ত জেলা পুলিশের পক্ষ হতে ৫,০০,০০০ টাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সমাজ সেবক, রাজনীতিবিদ এবং বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ হতে প্রাপ্ত টাকাসহ সর্বমোট ৫০,২৩,৮৭৮ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও ১৫,০০,০০০ লক্ষ টাকার ত্রান সামগ্রী জমা পড়ে।
জনাকৃত নগদ টাকায় ত্রান সামগ্রীর ১০,০০০ প্যাকেট প্রস্তুত করা হয়েছে। যার প্রতি প্যাকেটে চিড়া-আধা কেজি, চিনি-আধা কেজি, ডাল-২কেজি, চাল-৫ কেজি, সুজি-আধা কেজি, খাবার স্যালাইন-২টি এবং সাবানসহ প্রয়োজনীয় ত্রান সামগ্রী রয়েছে। ০৫/০৯/২০১৭ খ্রিঃ ১৭.০০ ঘটিকায় বন্যা দুর্গত কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলায় ত্রান সামগ্রী পৌছানোর জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারসহ জেলার সাংবাদিক, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি ট্রাক ও কভার্ডভ্যান, মিনি ট্রাক ও মাইক্রোবাস যোগে যাত্রা শুরু করবে। এছাড়া দিনাজপুর জেলায় বন্যায় অধিক ক্ষতিগ্রস্থ কমপক্ষে ২০/২৫টি বসত ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোর বসতঘর নির্মাণের জন্য শীঘ্রই একটি টিম দিনাজপুর জেলায় যাবে।
০৫/০৯/২০১৭খ্রিঃ ১৬.০০ ঘটিকায় পুলিশ লাইন্স ব্রাহ্মণবাড়িয়া হতে বন্যা দুর্গতদের সাহায্যার্থে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর পক্ষ হতে প্রদত্ত ত্রান সামগ্রীসহ যাত্রা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, মাননীয় সংসদ সদস্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ ও সভাপতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে জনাব রেজওয়ানুর রহমান, জেলা প্রশাসক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন জনাব মোঃ মিজানুর রহমান, পিপিএম(বার), পুলিশ সুপার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
এই মানবিক আবেদনে সাড়া পড়ে পুরো জেলা জুড়ে। সমাজের সকল শ্রেনী ও পেশার মানুষ এগিয়ে আসে। স্ব-স্ব অবস্থান থেকে বাড়িয়ে দিয়েছে সহযোগিতার হাত। যা বিষ্ময়কর ও সাড়া জাগানো । শুধু এই জেলার বাসিন্দা ছাড়াও প্রবাসিরাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। আমরা কৃতজ্ঞ যারা আমাদের এই মানবিক আহবানে সাড়া দিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। সবার দেওয়া গচ্ছিত আমানত আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবার বন্যায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলায় বন্যা ক্ষতিগ্রস্থের মাঝে বিতরণ করা হবে এই সামগ্রী।
আবারও বন্যার্তদের সাহায্যার্থে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সকল স্তরের জনগনের সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত প্রসারিত করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের পক্ষ হতে আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো হয়।প্রেস রিলিজ