ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় রাজনৈতিক সহিংসতার বলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : আতঙ্কে শিক্ষার্থী ও অবিভাবক



মো.শফিকুল ইসলাম, ব্রাক্ষণবাড়িয়া : সারাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে চলছে বই বিতরন। বছরের এই সময়টি প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের কাছে কেবল বই বিতরনই নয়,নএটি একটি উৎসবও বটে। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক অতিস্থরতায় বিশেষ করে স্কুলে সহিংসতার কারনে শিশুদের এই উৎসবে ছাই পরেছে।
দশম জাতীয় সংসদ র্নিবাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশের ন্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্কুলে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করায় এই হামলার শিকার হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে না যায় সেই লক্ষেই আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এই হামলা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনি ও বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। তারই অংশ হিসেবে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগের রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পেট্রোল বোমা সহ বিভিন্ন ভাবে আগুল দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হামলার শিকার স্কুল গুলো হলঃ-সদর উপজেলার ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি প্রাথামিক বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মাদ্রাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তোফায়েল আজম কিন্ডার গার্ডেন এবং সদর উপজেলার চর ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর মধ্যে ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা সঙ্গীন। এই অবস্থায় স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রয়েছেন চরম আতঙ্কে। অবিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কম।
সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায়, আগুনে ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষসহ চারটি কক্ষের চেয়ার-টেবিল, আলমারি, বই ও অফিসের নথিপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনে স্কুলের ৩০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায়। স্কুলের সহকারী শিক্ষক প্রবীর চন্দ্র ভৌমিক বলেন, স্কুলের যা ক্ষতি হবার তো হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীদের ক্লাশ নেব কোথায়? বসার স্থান কোথায়? ওই স্কুলের সবচেয়ে বড় সঙ্কট আবাসন সমস্যা বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, যেকোন সময় নাশকতার আশঙ্কায় এখন স্কুলে আসতে আমার নিজেরও ভয় লাগে।
নির্বাচনের আগের দিন বিকেলে শহরের মাদ্রাসা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’টি পেট্রোল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
তবে স্কুলটি বন্ধ থাকায় কেউ হতাহত হয়নি । বিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, দুর্বৃত্তরা ওই স্কুলটির নিচতলা ও দোতলায় দুটি কক্ষে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আক্তার হোসেন বলেন, পেট্রোল বোমা দিয়ে আগুন দেওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। আমরা শিক্ষকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে অবিভাবকদের বুজিয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়ে আসছি। অবিভাবকরা চরম আতঙ্কে রয়েছে।
এদিকে সদর উপজেলার চরইসলামপুর সরকালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আগুন নিভিয়ে ফেলায় তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার অধিকারী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এরকম নাশকতা কারোরই কাম্য নয়। যারা এগুলো করছে তারা দেশ ও জাতির শত্রু। শিক্ষার্থীরা যখন স্কুলে গিয়ে দেখবে তাদের সুন্দর বসার স্থানে কয়লা তখন তাদের মনে খুব খারাপ প্রভাব পরবে। আমরা অচিরেই দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে ব্যাবস্থা নেব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান পিপিএম বলেন, বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্র স্থাপন করায় এই হামলা হয়েছে। স্কুলে নাশকতার সাথে জরিতদের দরতে প্রতি রাতেই পুলিশের অভিযান চালছে। তাদেরকে প্রেফতার না করা পর্য্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।