ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার উদ্যোগে
১ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহের উদ্বোধন
“পরিচ্ছন্ন ও যানজট মুক্ত শহর গড়ে তুলি, নিরাপদ নাগরিক জীবন নিশ্চিত করি” এই শ্লোগানে পৌর এলাকার যানজট সমস্যা সমাধানে ১ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহের উদ্বোধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় শহরের কাউতলী মোড়স্থ হিরন্ময় সৌধ প্রাঙ্গণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন। উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মিসেস নায়ার কবির।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) মোঃ আবু সাঈদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রহিম, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (এডমিন) মীর গোলাম ফারুক, ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুফতি মকবুল হোসেন প্রমুখ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম শাহজাদা’র সঞ্চালনায় এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সচিব মোঃ সামছুদ্দিন, সহকারী প্রকৌশলী কাউসার আহমেদসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রিক্সা ও ইজিবাইক মালিক শ্রমিকবৃন্দ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বলেন, পরিচ্ছন্ন নগরীর জন্য একদিনে হয়তো সব নাগরিককে সচেতন করা যাবে না। তবে ধীরে ধীরে এর উন্নতি ঘটানো সম্ভব। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্ঠার মাধ্যমেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হবে শহর। তিনি বলেন, যানজট মুক্ত ও পরিচ্ছন্ন আধুনিক শহর গড়ে তুলতে জেলা প্রশাসন ও পৌর প্রশাসনের উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন, যানজট মুক্ত শহর গড়ে তুলতে শহরের যত্রতত্র স্থানে অবৈধ পার্কিং বন্ধ ও উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। কোনো অবস্থাতেই রাস্তায় কাউকে দোকানপাট বসাতে দেয়া হবেনা।
উদ্বোধকের বক্তব্যে পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, যত্রতত্র পার্কিং ও অবৈধভাবে ফুটপাত দখলের কারণে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে পথচারীসহ সাধারণ মানুষ নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এটি কারই কাম্য নই। তিনি বলেন, ১ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকায় বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করা হবে। সেখানে ট্রাফিক আইনের কোনও ব্যত্যয় ঘটলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষ্যে যদি কেউ অবৈধ পন্থা গ্রহণ তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার বলেন, অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে জনদুর্ভোগ ও আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অবনতি করার চেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা চাই সকলের সহযোগিতা নিয়ে সুন্দর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন করতে। তিনি বলেন, পৌর এলাকায় লাইসেন্স ব্যাতীত কোন গাড়ি রাস্তায় চলতে দেয়া হবে না। ট্রাফিক আইন লঙ্গন কারীদের কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এই ট্রাফিক সপ্তাহ থেকে পৌর এলাকার যানজট নিরসনের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম আরো বেগবান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে পৌর মেয়র নায়ার কবির বলেন, একটি পরিচ্ছন্ন আধুনিক শহর হিসেবে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাকে দেখতে চাই, সেই লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর প্রশাসন কাজ করছে, যানজট মুক্ত মডেল শহর গড়ে তুলতে উচ্ছেদ অভিযানে সকল ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের নাগরিকগণের সহযোগিতা করতে হবে। তিনি বলেন, শহরটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাক, সেটা নিশ্চয় সবারই চাওয়া। কিন্তু যেখানে- সেখানে ময়লা ফেলার কাজটিও আমরাই করি। আমাদের শহরের অধিকাংশ রাস্তাঘাট, পাবলিক প্লেস, সড়ক সবকিছুই নোংরা আবর্জনায় ভরা। এর দায়দায়িত্ব সরকার, পৌর কর্তৃপক্ষের ওপর অবশ্যই বর্তে, কিন্তু নাগরিক হিসেবে আমরা আসলে কতটা দায়িত্বসচেতন? সেটিও ভাবার বিষয়। তিনি আরো বলেন, যানজট মুক্ত শহর গড়ে তুলতে এই উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। কোনো অবস্থাতেই রাস্তায় ফুটপাত দখল করে কাউকে দোকানপাট বসাতে দেয়া হবেনা। আর এ কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার সর্বস্তরের নাগরিকগণকের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।