কুমিল্লায় শিক্ষাবোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষায় অন্য বিষয়ের প্রশ্নপত্র বিতরণ
১১ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ



কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের অধীন এইচএসসি পরীক্ষায় পৌরনীতি ও জীববিজ্ঞান প্রথম পত্রের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের বদলে দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন বিলি করায় ১১ ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। একই সঙ্গে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকেও তাঁদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার বোর্ডের গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া প্রতিবেদনে ওই সুপারিশ করে। এ ছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিধি মোতাবেক শাস্তি নিশ্চিত করে মন্ত্রণালয়কে জানানোর জন্য গতকাল বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেয়।
এদিকে কাল শনিবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠেয় পৌরনীতি ও জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা নতুন প্রশ্নে নেওয়া হবে। গতকাল বিজি প্রেস থেকে নতুন করে ওই দুই বিষয়ের প্রশ্ন ছাপা হয়। এরপর ওই প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠানো হয়।
বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ বলেন, গত বুধবার সকাল ১০টায় কুমিল্লা বোর্ডের ১৮১টি পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌরনীতি ও জীববিজ্ঞান প্রথম পত্রের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর কুমিল্লার নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্র ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষার্থীরা দেখতে পায় তাদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নাঙ্গলকোটের ঘটনায় দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে গতকাল বিকেলে বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুল খালেকের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে।
নাঙ্গলকোটের ঘটনার সঙ্গে পাঁচজনকে দায়ী করে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। তাঁরা হলেন নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সাদেক হোসেন ভূঁইয়া, সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ নুরুল্লাহ মজুমদার, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. গিয়াস উদ্দিন খান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. ওমর ফারুক ভূঁইয়া ও নাঙ্গলকোট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোনাজের রশিদ। ওই পাঁচ ব্যক্তিকে চলমান পরীক্ষার দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় ওই কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবদুল হানিফ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খালেদ হোসেন খান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. আখতারুজ্জামান, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সুমন কর্মকার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারী কমিশনার মো. আসলাম হোসাইনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। তাঁদেরও চলমান পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
এ ব্যাপারে নাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ভুলক্রমে ওই ঘটনা ঘটেছে।সূত্র: প্রথম আলো