সাবেক গৃহায়ন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে হত্যার পর মরদেহ গুমের মামলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মো. আতিকুল ইসলাম নামের এক বিএনপি কর্মীকে গুমের অভিযোগে সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ ১০ জনের নামে হয়েছে। সোমবার (সেপ্টেম্বর) আতিকুলের স্ত্রী নাছিমা ইসলাম বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারি আবু মুছা আনসারী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, চিনাইর গ্রামের হামদু মিয়া, শহরের কাজিপাড়ার রাজ্জাক মিয়ার ছেলে সেলিম মিয়া ও জসিম মিয়া, আতাউর রহমান ভূইয়া শাহীন, নবীনগরের নান্দুরার আবুল কাশেম, জিলানী ও শহরের মেড্ডা এলাকার জাকির মিয়া। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও সাত-আটজনকে আসামি করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মোকতাদির চৌধুরী তৎসময়ে দিনের ভোট রাতে ছিনতাই করে ব্যালট বাক্স ভরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তৎকালীন সময়ে ৩ নম্বর আসামি সেলিম মিয়ার সঙ্গে কাজীপাড়ার বাসিন্দা আতিকুল ইসলামের জমি-সংক্রান্ত বিরোধ দেখা দেয়। সেলিম ২০১১ সালের ১৭ অক্টোবর সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী মোকাতদিরের নির্দেশে সদর থানায় একটি মামলা হয়। ২০১২ সালের ১৩ অক্টোবর বেলা ৩টার দিকে মোকতাদিরের নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা (আসামি সেলিম ও জসিম) দুটি সাদা মাইক্রোবাসে এসে কাজীপাড়ায় আতিকুলের বাসায় যান। সেখানে গিয়ে তারা বলেন, সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী মোকতাদির সালাম দিয়েছেন এবং আতিকুলকে তাদের সঙ্গে মোকতাদিরের বাসায় যেতে বলেছেন। বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় গেলে মোকতাদিরের ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুছা আনসারীসহ অন্যান্য আসামিরা আতিকুলকে মুখে চেপে ধরে একটি সাদা মাইক্রোবাসে তুলি নিয়ে যান। ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা সদর থানায় অভিযোগ দিতে গেলেও মোকতাদিরের হস্তক্ষেপে পুলিশ বিষয়টি আমলে নেয়নি। দীর্ঘ ১২ বছর পর আতিকুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। মোকতাদিরের নির্দেশে মামলার আসামিরা আতিকুলকে নির্জন স্থানে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যার পর মরদেহ গুম করেছেন। স্বৈরাচারী সরকারের পতন হওয়ায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, সাবেক গণপূর্তমন্ত্রীসহ ১০ জনের নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর হত্যা করে মরদেহ গুমের অভিযোগ এনে থানায় মামলা হয়েছে।