ভারতীয় ঠিকাদার ফিরছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চার লেন সড়কের কাজ শুরু শিগগিরই
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নির্মাণাধীন চার লেন সড়কের কাজ পুনরায় শুরু হতে পারে। এই সময়ের মধ্যে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন ফিরে আসবে। শুক্রবার দুপুরে সড়কটি পরিদর্শনে এসে এ তথ্য জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সচিব বলেন, ‘ভারতীয় পক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে তোমরা আসো, কাজ করো- আমাদের অসুবিধা হচ্ছে। যতো দ্রুততার সঙ্গে সম্ভব কাজ করো। এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু হবে বলে ভারতীয় হাইকমিশনার নিশ্চিত করেছেন।’
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টাও কথা বলেছেন উল্লেখ করে সচিব মো. এহছানুল হক বলেন, ‘বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টার নজরে রয়েছে। জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে সড়কটি দেখার জন্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা আমাকে পাঠিয়েছেন।’
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চার লেন সড়ক প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী গত ১০ই আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে যায়। এরপর থেকেই বন্ধ এই প্রকল্পের কাজ। এদিকে কাজ বন্ধ থাকায় সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে কয়েক কিলোমিটার চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে হাজারো যানবাহন। নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনা। দীর্ঘ যানজটে নাকাল হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।
এই জনদুর্ভোগ লাগবে সড়কটি মেরামত করার অনুমোদন দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এরআগে সড়কটির বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ প্রধান উপদেষ্টার নজরে আনে। এরপরই গত ১৯ সেপ্টেম্বর মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে নির্দেশনা দেয়। তবে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিবের বক্তব্য অনুসারে এখন সংশ্লিষ্ট ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানই এই কাজ করবে। তা না হলেও কাজ ঝুলে থাকবে না বলে জানান তিনি।
সড়ক পরিদর্শনের সময় সচিবের সঙ্গে ছিলেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. মইনুল হাসান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান, প্রকল্প পরিচালক আব্দুল আউয়াল মোল্লা প্রমুখ।
ভারতীয় ঋণ সহায়তা ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৫ সালের ৩০ জুন। শুরু থেকে নানা কারণে প্রকল্পের কাজ পিছিয়ে যায়।
৩টি প্যাকেজে চলা এই কাজের মধ্যে আশুগঞ্জ থেকে সরাইল মোড় পর্যন্ত ১ নম্বর প্যাকেজের কাজ হয়েছে ৬২ ভাগ। দ্বিতীয় প্যাকেজ সরাইল মোড় থেকে আখাউড়া তন্তর পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৫২ ভাগ। আর তৃতীয় প্যাকেজে থাকা তন্তর থেকে আখাউড়া পর্যন্ত কাজ শুরুই হয়নি। বর্তমানে আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে তন্তর পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট এবং কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসড়কের বিভিন্নস্থানে প্রায় ৪ কিলোমিটার অংশ খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ইট দিয়ে এই অংশের অস্থায়ী মেরামতে ১৫ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা। যা স্থায়ী হবে মাস ছয়েক। সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট টিভি