Main Menu

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কোটি কোটি টাকার ঘাপলা, পিয়ন ইয়াছিন লাপাত্তা

+100%-

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সরকারের মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। অডিটে বিষয়টি ধরা পড়ার পর এ নিয়ে চলছে তোলপাড়। তবে এ নিয়ে মুখ খুলছেন না কোনো কর্মকর্তা। এদিকে ঘটনা ধরা পড়ার পর ওই রেজিস্ট্রি অফিসের এক পিয়ন হাওয়া হয়ে গেছে। নিবন্ধন পরিদপ্তর মহাপরিদর্শকের (আইজিআর) কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা মিতেন্দ্র নাথ শিকদারের নেতৃত্বে অডিট টিম গত ৩ দিন ধরে এখানে অডিট চালান। এ সময় সরকারের মোটা অঙ্কের টাকার ঘাপলা দেখতে পায় অডিট টিম। প্রাথমিকভাবে সেটি কয়েক কোটি বলে মুখেমুখে ছড়িয়ে পড়ে।

বিভিন্ন সূত্র জানায়, গত কয়েক বছর ধরে এখানে কর্মরত সাব রেজিস্ট্রাররা সরকারি চালান, নকল তল্লাশি, রেজিস্ট্রি ফিসহ নানা খাতের টাকা ব্যাংকে জমা না করে নিজেদের পকেটে ভরেন।

নিয়মানুযায়ী প্রত্যেক দিনের টাকা তাদের ব্যাংক হিসেবে জমা করার কথা ছিল। বর্তমান সাব রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমান ছাড়াও এখানে আগে কর্মরত সাব রেজিস্ট্রার মো. শাহআলম ও মোতাহার হোসেনের সময় এই ঘটনা ঘটে। তবে কি পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সূত্র জানিয়েছে, ১ কোটি টাকা তছরুপের একটি হিসাব প্রাথমিকভাবে পাওয়া গেছে। এই টাকা ওই তিন সাব রেজিস্ট্রার রোববার ব্যাংকে জমা দিয়ে বিপদ এড়াতে চাইছেন। সাব রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, টাকা আত্মসাতের তথ্য আমার জানা নেই। এ বিষয়ে এতকিছু আমি জানি না। টাকা ব্যাংকে জমা করার কথা ছিল কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ব্যাংকেই তো জমা করার কথা।

তার সময় টাকা ব্যাংকে জমা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি কি পিয়ন ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যাব।’ ২/৩ দিন ধরে অডিট চলছে বলে স্বীকার করেন তিনি। তবে এসব বিষয়ে কথা বলতে রোববার তার অফিসে যেতে বলেন।

বর্তমানে অবসরকালীন ছুটিতে থাকা সাব রেজিস্ট্রার মোতাহার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। অডিট শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু বলতে পারবো না।

সাব রেজিস্ট্রার মো. শাহআলমের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি অস্ট্রেলিয়া প্রশিক্ষণে যোগ দিতে গেছেন বলে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির এক নেতা জানান।

অডিট কর্মকর্তা মিতেন্দ্র নাথ শিকদার বলেন এ বিষয়ে তারা অডিট করছেন। অডিট শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না। আমরা অডিট শেষে আইজিআর’র কাছে রিপোর্ট দেবো। সাব-রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন বলেও তিনি জানান।

এদিকে অডিট শুরু হওয়ার পর অফিস সহায়ক ইয়াছিন বুধবার দুপুরে অফিস থেকে সটকে পড়ে। এ সময় তার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা ছিল বলেও জানা যায়। ইয়াছিনকে না পেয়ে তার পরিবার ও স্বজনদের বৃহস্পতিবার সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ডেকে আনা হয়। সাবরেজিষ্ট্রার তাদের কাছে ইয়াছিনের তথ্য-তালাশ করেন। ইয়াছিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।

আলোচনা রয়েছে ইয়াছিনকে সরিয়ে সে টাকা নিয়ে ভেগেছে এমনটি বোঝানোর একটি নাটক সাজানো হয়। এখন ইয়াছিনকে বের করে এনে সে টাকা ফেরত দিয়েছে বলে সাব রেজিষ্টাররা নিজেদের রক্ষা করতে চাইছেন। এদিকে অডিটে ঘাপলা ধরা পড়ার পর সাব রেজিস্ট্রার এবং ওই অফিসের অন্য কর্মকর্তারা দলিল লেখকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাবধান করে দেন। বলেন বিষয়টি বাইরে যাতে প্রকাশ না পায়।

 






Shares