Main Menu

বিজয় উদ্‌যাপনে ঐতিহ্যবাহী মোরগের লড়াই

+100%-

ডানা দিয়ে ঝাপটা, ঠোঁট দিয়ে আঘাত। প্রয়োজনে কাজে লাগানো হলো পায়ের বড় বড় নখ। পাল্টাপাল্টি আক্রমণে উভয়েই ক্ষত-বিক্ষত। মাঝে মাঝে চলছে শুশ্রুষা।আবার তেড়ে আসা। যেন দমবার নয় কেউ। তবে একটা সময় ক্লান্তি এসে ভর করলে হেরে যাওয়া। টিকে থেকে জয়লাভ।

বলা হচ্ছিল মোরগ লড়াইয়ের কথা। বিজয় দিবসে এমন আয়োজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ঐতিহ্যবাহী এ লড়াই দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়। এমন আয়োজন বিজয়ের আনন্দে যেন ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে- এমনটাই জানিয়েছেন মোরগ লড়াই উপভোগকারীরা।

মোরগ লড়াই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য। এ জেলার সরাইল উপজেলার ‘আসিল’ মোরগ সাধারণত লড়াইয়ে অংশ নেয়। অনেকে এটা ‘হাসলি’ মোরগ বলেও ডাকেন। এ মোরগ দেখতে বেশ বড়। স্বভাবেও তেজি। লড়াকু ভাব আছে এ প্রজাতির মোরগে। এ প্রজাতির মোরগ এখন অনেকটাই বিলুপ্তির পথে। তবে অনেক শখ করে এটাকে পালেন। কেউ কেউ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করেন। সরাইলে কয়েক বাড়িতে বিক্রিও হয় এ মোরগ।

ঐতিহ্যকে ধরে রাখার প্রয়াসে বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে মোরগ লড়াই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। মোট আটটি মোরগ পৃথক লড়াইয়ের অংশ নেয়। অংশগ্রহনকারি মোরগের মালিককে পুরস্কার দেওয়া হয়।

শহীদদের প্রতি সালাম প্রদর্শন, কুচকাওয়াজসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুরু হয় মোরগের লড়াই। মাঠের একটি অংশে ১২ ফুট বাই ১২ ফুটের দৈর্ঘ্য প্রস্থের দাগ কেটে সেখানে রাখা হয় দুটো মোরগ। মালিকের ইশারায় মোরগগুলো একে অপরকে আঘাত করে। এতে মোরগগুলো রক্তাক্তও হয়ে যায়। মালিক সেবা দিয়ে আবার পাঠায় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। এক পর্যায়ে কোনো একটা মোরগ ক্লান্ত হয়ে আর লড়াইয়ে অংশ না নিলে হেরে গেছে বলে ধরা হয়।

মোরগ মালিকরা জানান, লড়াইকালীন মোরগগুলো শক্তিশালী পা আর ঠোঁট দিয়ে একে অপরের নানা জায়গায় আঘাত করে। এতে মোরগের শরীরের বিভিন্ন জায়গাতে বিশেষত গলায় আর চোখের চারপাশে রক্ত বের হয় কিংবা জমাট বেঁধে যায়। আবার বেশিক্ষণ এই জমাট রক্ত গলার মধ্যে থাকলে শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে মোরগটির মৃত্যুও হতে পারে। শরীরের ওই অংশ থেকে রক্ত চুষে নিয়ে মোরগকে শারীরিকভাবে সুস্থ রাখা সম্ভব হয়।

মো. আলমগীর মিয়া নামে মোরগ মালিক জানান, তার মোরগের নাম ‘বাদশা’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ‘যুবরাজ’ নামে এক মোরগকে হারিয়ে দিয়েছে। তবে খুব একটা ক্ষতি হয়নি মোরগের। মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়লে সেবা দিয়ে দ্রুত সেরে তুলেছেন।

মো. আব্দুল লতিফ নামে আরেক ব্যক্তি জানান, তার মোরগটি যথেষ্ট সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছে। তবে শেষ দিকে এসে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। খেলাটা শখের হওয়াতে মোরগ মালিকরাও এটা বেশ উপভোগ করেন বলে তিনি জানিয়েছেন।সূত্র: কালের কন্ঠ






Shares