র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি মোকতাদিরের পরিদর্শন
নোঙরের দিনব্যাপী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান
যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান- ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্ট ও জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নদী নিরাপত্তার সামাজিক সংগঠন নোঙর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার আয়োজনে টাউনখাল রক্ষার্থে ৫দফা দাবি বাস্তবায়নে ও অবৈধ সাঁকু স্থাপনা উচ্ছেদের দাবিতে দিনব্যাপী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান উদ্বোধন করা হয়।
শনিবার ১৪ আগস্ট সকাল ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বয়ে চলা টাউনখাল সদর মডেল থানার সামনের অংশে এমন আয়োজন করা হয়। পরিষ্কার-পিরচ্ছন্নতা অভিযান নোঙর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সভাপতি শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজউদ্দিন জামি ও নোঙর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নদীপুত্র সুমন শামস। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান এডভোকেট লোকমান হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি ইব্রাহিম খান সাদাত, সাংবাদিক ইউনিয়নের আহবায়ক বাচিক শিল্পী মনির হোসেন, জেলা খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক নেহার রঞ্জন সরকার, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মোশারফ হোসেন ভূইয়া, ভরসা মানবিক সংগঠনের সভাপতি আলমগীর তালুকদার প্রমূখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাক খালেদা মুন্নী ও শিপন কর্মকার। নোঙর’র ৫দফা দাবি ১. খালের সীমানা নির্ধারণ ও সীমানা পিলার স্থাপন, ২. দখলদারদের তালিকা ও উচ্ছেদ, ৩. নদীর গভীরতা সমান খাল খনন ও নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা, ৪. সিসি ব্লক অপসারণ ও রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণ ৫. দুইপাড়ে পায়ে হাঁটার রাস্তা ও সৌন্দর্য বর্ধ্বন করা। নোঙর’র দিনব্যাপী কার্যক্রমে দুপুর ১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ৩ আসনের সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, নোঙর যে কাজটি করছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমি নোঙর’র সকল ভাল কাজের সাথে সমর্থন করি, তাদের ভাল কাজের সাথে আমি নিজেকে সবসময় সম্পৃক্ত রাখবো। ভাল কাজের জন্য নোঙর আমার কাছে যেকোন সহযোগিতা চাইলে আমি নির্দ্বিধায় তা করবো।
এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পূর্ব প্রান্ত দিয়ে বয়ে চলা তিতাস নদী থেকে উৎপন্ন শহরের ভিতর দিয়ে বয়ে চলা টাউনখালটি শহরের পশ্চিমে তিতাস নদীতে পতিত হয়েছে। এক সময় এ খাল দিয়ে পালের নৌকা, ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল করতো। বর্ষার মৌসুমে খালে পানি থৈ থৈ করতো অনবরত। দুই পাড়ে বেড়ে উঠা কিশোর-কিশোরিরা দাপিয়ে সাঁতার কাটতো। পাড়ের বাসিন্দারা হাড়ি পাতিল ধোয়া, কাপড় ধোয়া, বড়শি দিয়ে মাছ ধরা-ই ছিল বর্ষাকালের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কিন্তু কালের বিবর্তনে ভূমিদস্যুদের কবলে পড়ে ও পৌর কর্তৃপক্ষ এবং জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে জরাজীর্ণ অবস্থায় ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে টাউনখালটি। একদিকে ময়লা আবর্জনায় জর্জরিত আর অন্যদিকে দখলের পায়তারায় খালটির বিস্তীর্ণ এলাকা ভরাট করে দখলদারেরা নিজেদের করে নিয়েছে। নদীর গভীরতা সমান খনন এবং দুই পাড়ের সীমানা নির্ধারণ না করেই অপরিকল্পিতভাবে সিসি ব্লক বসানো হয় যা টাউনখালটি আজ নিজের অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণ না করার কারণে টাউনখালটি হারিয়েছে তার নিজস্বতা, হারিয়েছে তার গতি, হারিয়েছে তার সৌন্দর্য। শহরবাসী টাউনখালটি নিয়ে বর্তমানে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
বক্তারা টাউনখাল রক্ষার্থে জেলা পরিষদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আহবান করেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন নোঙর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নির্বাহী সদস্য সোহেল আহাদ।(প্রেস রিলিজ)