Main Menu

এবারও অনুপস্থিত নুরুল আমিন

+100%-

জাতীয় সব দিবসে অনুপস্থিতি তার। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, স্মৃতিসৌধ বা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন না কখনো। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগকে নিয়েও কটূক্তি করে বেড়ান তিনি। আলোচিত এই কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুল আমিন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ।
যথারীতি এবারো মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে কর্মস্থলে অনুপস্থিত এই কর্মকর্তা। আজ শনিবার শহরের ফারুকী পার্কে স্মৃতিসৌধে তার কার্যালয়ের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন সহকারী পরিচালক এবং অন্য দু’জন কর্মচারী। এরআগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবসে ১৭ই মার্চেও অনুপস্থিত ছিলেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৭ই জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যোগদানের পর জাতীয় কোন দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হননি নুরুল আমিন। জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা হয়েও কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন বিশেষ এই দিবসগুলোতে।

তার কার্যালয়ের নিজস্ব ফেসবুক আইডি লক্ষ্য করে দেখা গেছে, বিভিন্ন দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদনে বেদিতে রাখা ফুলের ছবি শুধু পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে ওই কার্যালয়ের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদনে আসা কারো ছবি নেই। শুধু তার অনুপস্থিতি আড়াল করতে এভাবে ছবি দেয়ার বিধান চালু করেছেন এই কর্মকর্তা। আজ স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিসল চক্রবর্তীর কাছে উপ-পরিচালক কোথায় জানতে চাইলে বলেন- তার সাথে ফোনে কথা বলেন।

কিন্তু মোবাইলে কল করে সাড়া পাওয়া যায়নি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো: নূরুল আমিনের।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যোগদানের পর মসজিদের নামে ঘুষ আদায়ের জন্য আলোচিত হয়ে উঠেন এই কর্মকর্তা। জেলায় অবৈধভাবে ইটভাটা চলতে দিয়ে এই ঘুষ আদায় করছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের কাছে এমন একটি অভিযোগ দেয়া হয়। গত ৬ই মার্চ সৌদি প্রবাসী দুলাল মিয়ার দেয়া অভিযোগে বলা হয়- শহরের পূর্ব পাইকপাড়ায় বাড়ির কাজ করার সময় পরিবেশ অধিদপ্তর তার বিরুদ্ধে পুকুর ভরাটের অভিযোগ আনে। এর প্রেক্ষিতে ভরাটকৃত জায়গা থেকে মাটি সরিয়ে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেন তিনি। তারপরও পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন তাকে।

জরিমানা মেটানোর পরও উপ-পরিচালক নুরুল আমিন নানাভাবে দুলালকে হয়রানি করতে থাকেন। একপর্যায়ে দুলালের কাছে নিজের বাড়ির একটি মসজিদের জন্য পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দেয়ার প্রস্তাব দেন নুরুল আমিন। সেই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বিসল চক্রবর্তী উপ-পরিচালক নূরুল আমিনের বরাত দিয়ে তার কাছে এক লক্ষ টাকা দাবি করেন। সেসময় এও বলেন, স্যারের টাকা না দিলে আপনার বিরুদ্ধে মামলা হবে। সেই টাকা না দেয়ায় চলতি বছরের ২রা জানুয়ারি দুলালের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়। সরাইলের শাহবাজপুরের সুবর্ণ ব্রিক ফিল্ডের মালিক সহিদুল ইসলাম রুবেল জানান- তার কাছ থেকে মসজিদের নাম দিয়ে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নুরুল আমিন।
পরবর্তীতে আবার চাহিদা মতো টাকা না দেয়ায় পরিবেশ ছাড়পত্র, ডিসির লাইসেন্সসহ সবকিছু থাকার পরও ঢাকার পরিবেশ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় তাদের ইটভাটায়। এসময় অন্যায়ভাবে ৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। রুবেল বলেন, টাকা না পেলেই ব্রিক ফিল্ড মালিকদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়। আর টাকা দিলে অবৈধ ব্রিক ফিল্ডের ধারে-কাছেও ঘেঁষেন না। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ১৮১টি ইটভাটার মধ্যে ৯৯টি ইটভাটাই চলছে অবৈধভাবে।

শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে এক অভিযোগকারীকেও জরিমানা করে তেলেসমাতি দেখিয়েছেন উপ-পরিচালক নুরুল আমিন। শহরের মধ্যপাড়া এলাকার পালপাড়া ইমামবাগের মো. ইব্রাহিম মিয়া শব্দ দূষষের প্রতিকার প্রার্থনা করে ২০১৯ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন। যাতে একই মহল্লার মৃত জুলুস মিয়ার ছেলে আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ইব্রাহিমের পার্শ্ববর্তী বাসায় ফার্নিচার তৈরির কারখানা প্রতিষ্ঠা করে সেখানে ইলেকট্রি মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে শব্দ দূষণ করার অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু এর ফল হয়েছে উল্টো। ইব্রাহিম মিয়াকেই ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে বসে পরিবেশ অধিদফতর। জরিমানার চিঠি হাতে পেয়ে তাজ্জব হন অভিযোগকারী।সূত্র: মানব জমিন






Shares