Main Menu

সাবেক গণপূর্তমন্ত্রীসহ ৩৫০ জনের নামে হত্যা মামলা

+100%-

সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, তার সহধর্মিণী মাউশির সাবেক মহাপরিচালক ও ইউনির্ভাসিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রেজারার প্রফেসর ফাহিমা খাতুনসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৫০ জনের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আরও ১০০/১২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

২০২১ সালের ২৭ মার্চ বিকেল ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর বাজারে বাদল মিয়া (২৬) নামের এক যুবককে হত্যার ঘটনায় তার বাবা জাবির মিয়া বাদী হয়ে সোমবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এই মামলাটি দায়ের করেন।

নিহত বাদল মিয়া সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার বজেন্দ্রগঞ্জ (লৌলারচর, চর হবিবপুর) গ্রামের জাবির মিয়ার ছেলে। জাবির মিয়া তার পরিবার নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর বাজারের পাশে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও নবীনগর পৌরসভার সাবেক মেয়র শিব শংকর দাস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন ও মুজিবুর রহমান বাবুল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. মহসিন, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মফিজুর রহমান বাবুল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম জহির, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ভিপি জায়েদুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহমুদুর রহমান জগলু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক হালিম শাহ লিল মিয়া, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এম. সাইদুজ্জামান আরিফ, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, ওলামা সমন্বয় পরিষদের জেলা সভাপতি ক্বারী আনিছ, জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি কাজী জাহাঙ্গীর, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর মৃধা, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফয়জুন নাহার টুনি, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মো. বাবুল আক্তার ও সনি আক্তার সূচী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ.এইচ মাহবুব আলম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি জালাল হোসেন খোকা, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান লেনিন ও রিদোয়ান আনসারী রিমো, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আলী আজম, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন রানা, জেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মহসিন খন্দকার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান রনি প্রমুখ।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সারা দেশে আন্দোলন হয়। ২৭ মার্চ সদর উপজেলার নন্দনপুর বাজারে মিছিল বের করে। সেখানে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা জড়ো হয়ে বিষয়টি মামলার প্রধান আসামি ও তাঁর স্ত্রীকে অবগত করেন। বেলা তিনটার দিকে মামলার প্রধান আসামি মোকতাদির চৌধুরী ও দ্বিতীয় আসামি ফাহিমা সদর উপজেলার বুধলে থাকা তৌহিদী জনতা ও ছাত্র-শিক্ষকের মিছিলে গুলি করে মানুষ হত্যা করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করার হুকুম দেন। তাঁদের হুকুমে আওয়ামী লীগের একটি মিছিল ঘটনাস্থলে পৌঁছে চায়নিজ রাইফেল, নাইন এমএম পিস্তলসহ রড, চায়নিজ কুড়াল, হকিস্টিক, বইঠা দিয়ে জনতার মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণসহ ভাঙচুর চালায়। তারা ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে গানপাউডার দিয়ে আশপাশের বিভিন্ন দোকানপাট পুড়িয়ে ফেলে। একপর্যায়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। আসামিদের ছোড়া গুলিতে বাদল মিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে প্রশাসনিক নির্দেশে ময়নাতদন্ত ছাড়াই বাদলের লাশ গ্রামের বাড়ি নিয়ে লালারচর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফ্ফর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।






Shares