ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুমিল্লা মহাসড়ক চার লেন হচ্ছে
ডেস্ক ২৪:: ব্রাহ্মণবাড়িয়া – কুমিল্লা জাতীয় মহাসড়কটি চারলেন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটি খুবই জরাজীর্ণ হওয়ায় আগামী তিন বছরে এটি নির্মাণ করা হবে। এর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। ব্যয় অনুমোদনের জন্য সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে সম্প্রতি এর ওপর পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে জাতীয় সংসদের অনুমতি হিসাব-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন এমপি জানান, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় এবং উপআঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন দরকার। কারণ আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহারে ভারতকে সুযোগ দেয়া হলেও অবকাঠামো একবারে নেই।
আবার কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জাতীয় মহাসড়কের (এন-১০২) ময়নামতি থেকে ধরখার পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার খুবই জরাজীর্ণ। তা মাত্র সাড়ে পাঁচ মিটার প্রস্থ। কাজেই ভারী যানবাহন যাতায়াত করা কষ্টকর। আবার ঢাকা-সিলেট চারলেন ও ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ দুই চারলেনের সঙ্গে কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুক্ত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ হবে। তাই এ উদ্যোগ। তা বাস্তবায়ন করতে ব্যয় অনুমোদনের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা-ডিপিপি তৈরি করে সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, কুমিল্লা (ময়নামতি)-ব্রাহ্মণবাড়িয়া (ধরখার) জাতীয় মহাসড়ককে চারলেন জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ নামক প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে করা হবে। এতে ব্যয় হবে দুই হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটির নির্মাণকাল ধরা হয়েছে চলতি বছরের মে থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত সময়।
সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলাকাগুলো হচ্ছে- কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর, বুড়িচং, দেবীদ্বার, ব্রাহ্মণপাড়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা ও আখাউড়া উপজেলা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। প্রকল্পটিতে ৬৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২৩ দশমিক ২০ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। ২১১ কোটি টাকা ব্যয়ে মাটির কাজ, প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে অফিস ভবন নির্মাণ করা হবে। ৫৪ কিলোমিটার পেভমেন্ট নির্মাণ হবে। ১ হাজার ৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫টি ব্রিজ, ৫০টি কালভার্ট, ১২টি ফুটওভার ব্রিজ ও ২টি আন্ডারপাসও নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্পটিতে ১৪টি জিপ, পিকআপ ও মোটরসাইকেল কেনার জন্য প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। কমিশন মনে করছে, তা বাস্তবভিত্তিক নয়। প্রতিটি মোটরসাইকেলের মূল্য ধরা হয়েছে ২৬ লাখ টাকা। তা খুবই অবাস্তব বলে পিইসি সভায় আপত্তি তোলা হয়। এ ছাড়া ১২৩ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণে প্রায় সাড়ে ৬৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও জেলা প্রশাসকের ব্যয় প্রাক্কলন সংযুক্ত করা হয়নি। এভাবে বিভিন্ন অঙ্গের ব্যয়ে অসঙ্গতি পায় পরিকল্পনা কমিশন। তা সংশোধন করা দরকার বলে পরিকল্পনা কমিশন মনে করে। এসব প্রক্রিয়া শেষ করে খুব শিগগিরই প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন পেতে যাচ্ছে বলে সূত্র জানায়।