ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাত ইউপিতে উপনির্বাচন : ভোটার ছাড়াই ভোট সম্পন্ন, সাংবাদিক লাঞ্ছিত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চারটি উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল আটটায় এই ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
ইউনিয়নগুলো হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ, বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর, নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট, ধরমন্ডল, গুনিয়াউক, কুন্ডা ও নবীনগর উপজেলার কাইতলা উত্তর। এর মধ্যে বিজয়নগরের পাহাড়পুর, নাসিরনগরের ভলাকুট ও নবীনগরের কাইতলা উত্তর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ হয়েছে।
এদিকে সরেজমিনে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ভো্ট কেন্দ্র গুলো একেবারেই ভোটার শূন্য। তবে ব্যালট বক্স ছিল ভোটে পূর্ণ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউপির নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের পক্ষের লোকজন জোর করে ভোট দেওয়ার চেষ্টা চালান। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সেজামুড়া হুমায়ুন কবির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কাউছার ভূঁইয়ার নেতৃত্বে যুবলীগের লোকজন নৌকা প্রতীকে জাল ভোট দিতে থাকেন।
এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গেলে প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি শাহাদত হোসেনকে কাউছার ভূঁইয়া ও তাঁদের লোকজন তাঁকে লাঞ্ছিত করে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। কিছুক্ষণ পর গণমাধ্যমকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করেন।
ঘটনার পরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আমি নিঃশর্তভাবে বসে প্রথম আলোর প্রতিনিধির সঙ্গে যা ঘটেছে, তা শেষ করতে চাই।’
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আরশাদ বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাইনি। এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ভিটি দাউদপুর কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় কেন্দ্র ভোটার শূন্য হলেও কেন্দ্রে ও বাইরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর জটলা করে আছেন। তারা একেকজন একাধিক জাল ভোট দিচ্ছেন বলে অভিযাগ করেছেন বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাব উদ্দিন ভূইয়ার এজেন্টরা।
ওই কেন্দ্রের একটি বুথের ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্ট মো. শাহীন অভিযোগ করেবলেন, ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর বিজয়নগর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মাহবুব হোসেনের নেতৃ্ত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জোরপূর্বক কেন্দ্রে ঢুকে জাল ভোট দেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পোলিং এজেন্টদের সামনেই তারা নৌকা প্রতীকে সিল মারছে। বিষয়টি প্রিসাইডিং অফিসারকে জানানোর পরও তিনি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
এসময় সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্বরত আলোচিত এসআই মোঃ মহিউদ্দিনকে নির্বিকার দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এজেন্ট জানান, এসআই্ মহিউদ্দিনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সেখানে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নিজেদের অবস্থার দৃঢ় করে। ফলে আতঙ্কে কোন ভোটার ভোট দিতে আসেনি।