Main Menu

বিদ্রোহী প্রার্থী, কোন্দল ও প্রার্থী বাছাইয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকার ভরাডুবি

+100%-

তৃতীয় ধাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়েছে। রোববার জেলার ৩ উপজেলার ২৪টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন।

গতকাল সরাইলের ৯টি, নবীনগরের ১৩টি ও বাঞ্ছারামপুরের ১১টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা নয়টি করে ইউপিতে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে পাঁচটিতে স্বতন্ত্র ও একটিতে জাপার প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া এই তিন উপজেলার ৯ ইউপিতে আওয়ামী লীগের আট জন ও আওয়ামী লীগের একজন বিদ্রোহী বিনা ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তিন উপজেলার ২৪টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ১৪১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে প্রতি ইউপিতেই আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ছিলেন। এর বিপরীতে ২২টি ইউপিতে ৪৯ জন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। তৃণমূলের কর্মীরা আগে থেকেই বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে দলীয় প্রার্থীদের ভরাডুবি হবে বলে আশঙ্কা করেছিলেন।

নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাই নিয়ে স্থানীয় সাংসদ এবাদুল করিম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ ফয়জুর রহমানের মধ্যেও দূরত্ব ছিল। এতে ভোট ভাগাভাগি হয়েছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক ও নবীনগর পৌরসভার মেয়র শিব সংকর দাস বলেন, দুই কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পরাজয় হয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ে ত্রুটি, স্থানীয় নেতা–কর্মীদের দ্বন্দ্ব, ঐক্য না থাকা ও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ না কর—এসব কারণে দলের ভরাডুবি হয়েছে।

শিব সংকর দাস বলেন, যেখানে আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে, সেখানে দলীয় নেতা–কর্মীদের মধ্যে ঐক্য ছিল। যেখানে জয় পায়নি, সেখানে ঐক্য ছিল না। নির্বাচনে ভালো করবে না, এমন অনেককেই নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ফলে দলীয় নেতা–কর্মীদের বাদ দিয়ে অনেকেই বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। এসবের জন্য স্থানীয় নেতা–কর্মীরাই দায়ী। ভবিষ্যতে আলোচনা করে প্রার্থী বাছাই করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে সরাইল উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আশরাফ উদ্দিন নির্বাচনের ফলাফলের পর প্রার্থী বাছাইয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।

ওই ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘তৃণমূলের ভোটে বিজয়ীরা যদি নৌকা প্রতীক পেত, তাহলে অন্যরা বিদ্রোহী প্রার্থী হতো না। দলের ত্যাগী এবং যোগ্যরা হাইব্রিড ও নন আওয়ামী লীগের কাছে হেরে বাধ্য হয়েই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। যে দলের সদস্য না, তাকে কেন নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে। নৌকার পরাজয়ের অন্যতম কারণ প্রার্থী বাছাইয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, ইউপি নির্বাচন হলো অঞ্চলভিত্তিক নির্বাচন। এখানে গোষ্ঠীগত একটা প্রভাব থাকে। সেই হিসেবে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে ভোটে প্রভাব পড়েছে। বিদ্রোহীদের ব্যাপারে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।






Shares