Main Menu

বাংলাদেশের সাথে ভারতের একটা হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক চাই

+100%-

স্বদেশ রয় : টাইমস অব আসামের নিয়মিত লেখক এবং ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক জনকণ্ঠের নিবার্হী সম্পাদক। তাঁর সাম্প্রতিক সময়ে ভারত সফরের সময় আসামের মূখ্যমন্ত্রী তরুণ গগয়’র সাথে দেখা এবং তাঁর সাক্ষাৎকার গ্রহণের সুযোগ হয়। গত ২৫ জানুয়ারী, আসামের মূখ্যমন্ত্রী তাঁর এক্লুসিভ ইন্টারভিউ দেন তাঁর নিজ কার্যালয়ে যেখানে তিনি তাঁর বাংলাদেশে সফর, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেকার বিশেষ হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। কথা বলেন টিপাইমুখ বাধ নিয়েও। সাক্ষাৎকারটি টাইমস অব আসাম পত্রিকায় ২০ ফেব্রুয়ারী ছাপা হয়। অনুবাদ করেছেন এখন সময়’র সহ-সম্পাদক বাবুল নকরেক

প্রশ্ন : আপনি সম্প্রতি সময়ে আপনাদের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশ সফর করেছেন। সে আলোকে আপনার অভিজ্ঞতার কথা বলবেন?

তরুণ গগয় : এটা ছিল সাফল্যাতীত একটা সফর। সকল ক্ষেত্রে, সবখানে আমরা সকলের আন্তরিক এবং ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া, মতামত পেয়েছি বাংলাদেশ থেকে। আমাদের পূর্বনির্ধারিত সভা, আলোচনার বাইরেও আমি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ, এলিট শ্রেণীর মানুষ, যেমন: জাস্টিস, আমলা, আইনজীবি এবং বিভিন্ন পেশাজীবির মানুষের সাথে কথা বলেছি। আমরা মিডিয়ার লোকজনদের সাথেও কথা বলেছি। আমরা জেনেছি সকলে খুব সুখী আছেন, ভাল আছেন এবং তারা আরো দু’দেশের মধ্যে আরো উন্নত সম্পর্ক প্রত্যাশা করেন।

প্রশ্ন : আপনার ঐ সফরের ফল কী, বলবেন?

তরুণ গগয় : ঐ সফর দুই দেশের জন্যই ইতিবাচক ছিল। সমস্যা আছে অনেক। কিন্তু আমাদের সেগুলো সমাধান করতে হবে। দু’দেশের অনেক সমস্যা প্রায় একই যেমন: ব্রহ্মপুত্রের জলপ্রবাহ। এটা দুই দেশের জন্যই সমস্যা। আমরা অবশ্যই এর সমাধান চাই যৌথ উদ্যোগে।

প্রশ্ন : প্রথমবারের মত উত্তর পূর্ব ভারতের চারজন মুখ্যমন্ত্রী একযোগে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বাংলাদেশ সফর করেছেন। এই সফর কি ভারতের সাথে বাংলাদেশের খুব ঘনিষ্ঠ এবং আন্তরিক সম্পর্কের ইঙ্গিত বহন করছে?

তরুণ গগয় : সেটাই মূল লক্ষ্য। আমরা সে মেসেজটাই দিতে চেয়েছি যে আমরা বাংলাদেশের সাথে বিশেষ হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।

প্রশ্ন : বাংলাদেশের কাছ থেকে আসাম কী ধরণের সুবিধা আশা করে?

তরুণ গগয় : সব রকমের সংযোগ-সড়ক, নদী, রেল যোগাযোগ। মূলত: আমরা সব রকমের সংযোগ চাই, যেমন ১৯৪৭ সালের আগে ছিল। আমরা চট্টগ্রাম, আসুগ্যাং এবং মংলা বন্দরের সুবিধা চাই।

প্রশ্ন : আমরা জানি, বাংলাদেশ চায় ভারতের সাথে একটা আন্তরিকতাপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পর্ক। আপনার সরকার কি এর সমর্থনে কাজ করছে?

তরুণ গগয় : ভারত সরকার এই লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এছাড়াও, আমাদের নিজেদের স্বার্থেও এটা জরুরী। ট্রানজিট কি কারণে জরুরী? সবকিছুই তো ঐ অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন, বানিজ্য প্রসারের জন্য। আমরা একটি শক্তিশালী, অর্থপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য কাজ করছি।

প্রশ্ন : আসামের রয়েছে হাইড্রো-ইলেক্ট্রিক সম্ভাবনা—বাংলাদেশ কি ভাবে এ থেকে লাভবান হতে পারে বলে মনে করছেন?

তরুণ গগয়: আমাদের সীমিত হাইড্রো-ইলেক্ট্রিক সম্ভাবনা রয়েছে। এর বেশির ভাগই অরুনাচলে।

প্রশ্ন : এটা কি সম্ভব, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীগণ আসামে বিনিয়োগ করতে পারেন?

তরুণ গগয় : অবশ্যই। তাঁরা এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন। তাঁরা এখানে বানিজ্য করতে পারেন এবং যে কোন সেক্টরে বিনিয়োগ করতে পারেন।

প্রশ্ন : আমরা জানি, আসাম এখানে জুট মিলস বৃহদাকারে করার চেষ্টা চালিয়েছিল কিন্তু সফল হতে পারেনি। আপনি কি মনে করেন বাংলাদেশ-আসাম এই সেক্টরে যৌথভাবে কাজ করতে পারে?

তরুণ গগয় : কেউ যদি এগিয়ে আসেন, আমি খুবই খুশি হব।

প্রশ্ন : যদি এই উদ্যোগ টা বাংলাদেশ সরকার নেয়?

তরুণ গগয় : নিশ্চয়ই, আমি যদি বাংলাদেশ সরকারের সাথে কথা বলতে পারি, আমরা যৌথভাবে কাজে নামতে পারি।

প্রশ্ন : আমি আসামে অনেক লোক দেখেছি যারা টিপাইমুখে বাধ এর বিপক্ষে, বাংলদেশ এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। এই ব্যাপারে আপনার অভিমত কি?

তরুণ গগয় : প্রত্যেক বাধের পেছনে দু’টো দিক থাকে। এক হলো দেশের জন্য কল্যাণ আনয়ণ, অন্যদিকে এটা দেশের জন্য ক্ষতিও বয়ে আনতে পারে। এখন আমাদের হিসেব নিকেশ করতে হবে এই বাধের লাভ আর ক্ষতির বিষয়টি। যদি বাধ টা দেশের জন্য লাভজনক হয় তবে আমরা তার পক্ষে, আর যদি লাভের থেকে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয় তবে আমরা অবশ্যই এর বিপক্ষে।

প্রশ্ন : আমরা জানি, যে কোন উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ অপরিহার্য একটা বিষয়।  কিন্তু বাংলাদেশীরা এই বাধ নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন—বিষয় টা কিভাবে সমাধান করা যাবে?

তরুণ গগয় : আমরা চাই বাংলাদেশ এই বাধ এর সাথে সম্পৃক্ত হবে এবং যদি কোন সুফল আসে এই বাধ থেকে তার ভাগিদারও হবে বাংলাদেশ।

প্রশ্ন : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে কিছু বলবেন?

তরুণ গগয় : আমি তাঁকে একজন প্রগতিশীল নেতা মনে করি। তিনি ভারতের সাথে বন্ধুত্ব আরো জোরদার করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আন্তরিকভাবে বাংলাদেশ ও তার সাধারণ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্যও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রশ্ন : তিনি সাম্প্রতিককালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সফর করেছেন। আপনি কি চান তিনি আপনার রাজ্যও সফর করুন?

তরুণ গগয় : আমরা সত্যিই খুশি হব আর আমি হব সব থেকে সুখী মানুষ যদি তিনি আমাদের রাজ্যও সফর করেন।






Shares