Main Menu

সৌদি আরবে আকামা পরিবর্তনের সুযোগ পাচ্ছেন পাঁচ লাখ বাংলাদেশী

+100%-
সৌদি আরবে থাকা প্রায় পাঁচ লাখ বাংলাদেশী অবশেষে আকামা (কাজে অনুমতি) পরিবর্তনের সুযোগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য দীর্ঘদিন ধরে এ সুযোগ বন্ধ রেখেছে সৌদি সরকার। গত তিন বছরে দেশটির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দফায় দফায় আলোচনার পর এর জট খুলছে বলে জানিয়েছে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। আকামা পরিবর্তন, সৌদি সরকার ঘোষিত নতুন শ্রমনীতি এবং দেশটিতে থাকা বাংলাদেশীদের অন্য সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে আগামী সপ্তাহে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন। সৌদি শ্রমবিষয়ক মন্ত্রীর আমন্ত্রণে মহাজোট সরকারের আমলে প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর বলে জানানো হয়েছে। ওই প্রতিনিধি দলের সদস্য প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. জাফর আহমদ খান মানবজমিনকে বলেছেন, বাংলাদেশী শ্রমিকদের সমস্যা লাঘবে দেশটির তরফে স্পষ্ট ঘোষণা চাইবেন তারা। একই সঙ্গে বেশিসংখ্যক বাংলাদেশীর ভিসা প্রদানের প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হবে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক কর্মরত আছেন। তারা সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন কারখানায়, বাসাবাড়িতে কাজ করছেন। এর সর্বোচ্চ সংখ্যক শ্রমিক কাজ করছেন সৌদি আরবে। রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের দেয়া তথ্য মতে, সৌদি আরবে বর্তমানে শ্রমিকের সংখ্যা ২০ লাখের অধিক। কিন্তু সৌদি সরকারি সূত্রের দাবি, দেশটিতে প্রায় ১৬ লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক কাজ করছেন। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ থেকে ২ লাখ ৪ হাজার শ্রমিক বৈধ ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে সৌদি আরবে যায়। পরের বছর যায় ১ লাখ ৩২ হাজার শ্রমিক। কিন্তু এরপর থেকে সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানি কমতে শুরু করে। সর্বশেষ ২০১১ সালে ১৫ হাজার ৩৯ জন শ্রমিক দেশটিতে পাড়ি জমায়। সৌদি সরকার ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে আকামা (ওয়ার্ক পারমিট) স্থানান্তরে কড়াকড়ি আরোপ করে। দেশটির বিদ্যমান আইনে কেউ বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে সৌদি আরবে গেলে তাকে কমপক্ষে দু’বছর পারমিট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর আগে তাদের কেউ আকামা স্থানান্তর করতে পারবে না। কিন্তু তাদের অনেকে চাকরির মেয়াদ দুই বছর পূর্ণ হওয়ার পর আবেদন করেও আকামা স্থানান্তর বা নবায়ন আর হয়নি। এ নিয়ে সৌদি আরবে থাকা শ্রমিকরা দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে বেকায়দায় রয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব সফরে যান এবং কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে দেশটির সঙ্গে আলোচনা করেন। এরপর সৌদি সরকারের মনোভাব কিছুটা ইতিবাচক হয়। গত বছরের জুলাই মাসে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সউদ আল ফয়সালে সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপুমনি। এ সময় সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, আকামা পরিবর্তনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া শ্রমিকরা দু’দেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসাবে অবদান রাখছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এর পর থেকে সরকার বিষয়টি সমাধানের জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু করে। সব শেষ গত মাসে সৌদি আবর সফর করেন প্রবাসী কল্যাণ সচিব। এসব তৎপরতায় বিষয়টির সমাধানে মৌখিক স্বীকৃতি পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির শ্রমমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার আদেল বিন মোহাম্মদ আল ফাকিহ’র আমন্ত্রণে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দরকার মোশারফ হোসেন সৌদি সফরে যাচ্ছেন। তার সঙ্গে যাচ্ছেন সরকার উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। ওই দলে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব শেখ ওয়াহিদ-উজ-জামান, প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মহাপরিচালক ও জনশক্তি প্রশিক্ষণ কর্মসংস্থান ব্যুরোর মহাপরিচালক।






Shares