Main Menu

সরাইলে স্কুল ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হত্যার অভিযোগ

+100%-
সরাইল প্রতিনিধিঃ সরাইলে জাসিম মিয়া (১১) নামের পঞ্চম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যুকে ঘিরে নানা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ প্রতিপক্ষ পাকশিমুলের কতিপয় লোক মারধোর করে জাসিমকে হত্যা করেছে। পাকশিমূলের লোকজন বলছেন, এটি নিছক দূর্ঘটনা। পানি সেচের মেশিনের সাথে গলার গামছা পেঁচিয়ে পড়ে ঘটনা স্থলেই  ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্যই এ হত্যা মামলা করা হয়েছে। গ্রামের অনেকেই বলছেন বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়েই জসিমের মৃত্যু হয়েছে।  উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের সংঘর্ষ ও খুনের জনপদ খ্যাত ধামাউড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। জাসিমের পরিবারের লোকজন জানায়, সংসদ সদস্য সভা করে দুই ইউনিয়নের অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়ার দুই দিন পরই স্কুল ছাত্র হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ধামাউড়া গ্রামের দরিদ্র ইলেকট্রিক মিস্ত্রি রফিক। তার দ্বিতীয় ছেলে জাসিম। বুট, বাদাম ও ঝাল মুড়ি বিক্রি করতো সে। ধামাউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর অনিয়মিত ছাত্র ছিল জাসিম। গত সোমবার দেড়টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে বাড়ি ফেরার পথে পাকশিমুল গ্রামের কিছু লোক জাসিমকে বেধরক পেটায়। খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাসিম মারা যায়। নিহতের পিতা রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমি সহ আমার পরিবারের ছয় জন পাকশিমুলের কলেজ ছাত্র দুলাল হত্যা মামলার আসামী। তাই তারা পরিকল্পিত ভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। মারধোরের পর ছেলেকে দেখিনি। মামলার বিষয়ে ও কিছু জানি না। গোষ্টীর লোকজন যা ভাল মনে করে তাই করবে। আমি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি। নিহতের চাচা তাজুল ইসলাম বলেন, দুই ইউনিয়নের সংঘর্ষে দুলাল মারা যায়। পাকশিমুলের লোকজন অরুয়াইলের ৭৬ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা করেছে। ওই মামলায় শুধু ধামাউড়া গ্রামের ৭৩ জন আসামী। তাদের চোখে আমরা শত্রু। তাই আমার ভাতিজাকে তারা খুন করেছে। গতকাল সরজমিনে গেলে পাকশিমুল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কাছম আলী ও শিক্ষক সামছুল আলম বলেন, এ শিশুর কোন শত্রু থাকতে পারে না। শিশু জাসিম তাদের গ্রামেই দূর্ঘটনায় মারা গেছে।  এটা দুলাল হত্যা মামলাকে দূর্বল করার একটা চেষ্টা মাত্র। ধামাউড়া গ্রামের বাসিন্দা নিহত জাসিমের সহপাটি মোঃ মনির হোসেন (১১) জানায়, একবার শুনেছি মেশিনের সাথে গামছা পেঁছিয়ে আবার শুনেছি গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছে। অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, জাসিমের মৃত্যুর কারন দূর্ঘটনায় ও মারধোর দুটোই শুনেছি। কোনটি সঠিক বলতে পারছি না। পাকশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, জাসিম তার নিজ গ্রামেই মারা গেছে। আমার ইউনিয়নের লোকজন মেরে ফেলেছে বলে দুলাল হত্যা মামলার কাউন্টার দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। এটা গভীর ষড়যন্ত্র। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার চক্রবর্তী বলেন, দূর্ঘটনায় জাসিমের মৃত্যু হয়েছে শুনেছি। ঘটনাটি তদন্ত করছি। প্রসঙ্গতঃ দুই কলেজ ছাত্রের হাতাহাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে  গত ২৩ মার্চ অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে পাকশিমুলের দুলাল গুরুতর আহত হয়। চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিয়ে যায়। ২৬ মার্চ দুলাল মারা যায়। দুলালের পিতা জাহের মিয়া বাদী হয়ে ৭৬ জনকে আসামী করে সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।