Main Menu

সদর থানায় পুলিশে পুলিশে বিয়ে

+100%-

শামীম উন বাছির ঃ ‘আমাকে ক্ষমা করে দিও, আজ আমি বিয়ে করতে যাচ্ছি’। স্বামী আতিকুর রহমানের মোবাইল ফোন থেকে আসা এমন ম্যাসেজ পেয়ে রুমা আক্তারের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে । হরতালের বাঁধ ভেঙ্গে ছুটে আসেন স্বামীর বাড়িতে। সেখান থেকে স্বামীর হবু দ্বিতীয় স্ত্রী’র বাড়ি। তখন বিয়ের সব আয়োজন সম্পন্ন। বরযাত্রীদের খানাপিনা চলকালীন সময়ে বিয়ে বাড়িতে হাজির হয় রুমা। মুহুর্তেই সব উলট-পালট হয়ে যায়। বরযাত্রীরা সটকে যেতে পারলেও আটকা পড়েন বর ও তার স্বজনরা।
পরবর্তীতে সালিস সভার মাধ্যমে আতিকুর রহমান ও  তার স্বজনরা বিয়ে বাড়ি থেকে ছাড়া পায়। রুমাকে দেয়া হয় সদর থানায়। আতিকুর রহমান ও রুমা আক্তার দু’জনই পুলিশ সদস্য। গত বৃহস্পতিবার রাতে ছয় লাখ টাকা কাবিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় আতিকুর রহমান ও রুমার বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর থানা পুলিশসহ উপস্থিত সবার মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। পুরো ঘটনাটি নিয়েই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রয়েছে ব্যাপক আলোচনা।   
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বেহাইর গ্রামের শিক্ষক মো. আতাউর রহমানের ছেলে ও ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের কনস্টেবল আতিকুর রহমান ও কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার কার্তিকখোলা গ্রামের সুলতান আহমেদের কন্যা রুমা আক্তার পুলিশ সদস্য হিসেবে ঢাকায় কর্মরত। আতিকুর রহমান ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের কনস্টেবল ও রুমা পুলিশ হেড কোয়ার্টারের নারী নির্যাতন সেলের কনস্টেবল। তাঁদের  মধ্যে প্রেমের পরিণতি হিসেবে বিয়ে হয় বছর খানেক আগে।
প্রথম বিয়েটি গোপন রেখে আতিকুর রহমান নিজ ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করতে আসেন গত বুধবার। বর যাত্রীদের খাওয়া-দাওয়া চলার সময় বিয়ে বাড়িতে হাজির হয়ে রুমা পুরো বিষয়টি খুলে বললে তোলপাড় শুরু হয়। কনে পক্ষ সাথে সাথেই এ  বিয়ে ভেঙ্গে দেন। এলাকার লোকজন বর ও তার স্বজনদের আটকে রেখে এলাকাবাসীকে খবর দেয়। পরে সালিশ সভার মাধ্যমে রাতের বেলা বিয়ে বাড়ি থেকে ছাড়া পায় আতিকুর রহমান ও তার স্বজনরা। রাতের বেলা পুলিশ প্রথম স্ত্রী রুমাকে সদর থানায় নিয়ে আসেন।
এলাকাবাসী জানান, রাতের বেলা এলাকার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোমিন খানের উপস্থিতিতে উভয়পক্ষের অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে সালিশের পর আতিকুর রহমান ও তার স্বজনদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে আতিকুর রহমান ও রুমার অভিভাবকদের উপস্থিতিতে সদর থানায় ৬ লাখ টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে তাদেরকে তাদের অভিভাবকদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
রুমা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, ২০০৮ সালে আতিকুর রহমানের সাথে তার প্রেম হয়। পরে তাদের মধ্যে বিয়ে হয়। আতিকুর রহমান একাধিকবার তাদের বাড়িতে বেড়াতেও যায়। কিন্তু আতিকুর রহমান তার সাথে প্রতারনা করে আবার বিয়ে করতে যায়। বিয়ের দিন সকালে ম্যাসেজ পেয়ে ছুটে আসি।
সদর থানার এস.আই দেলোয়ার হোসেন বলেন, ’স্বামীর ম্যাসেজ পেয়েই রুমা ছুটে আসে বিয়ে বাড়িতে। এনিয়ে এলাকায় সালিশও হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় সদর থানায় একটি জিডি করে তাদের মধ্যে বিয়ে পড়িয়ে দেই’।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবদুর রব বলেন, ’বৃহস্পতিবার রাতে থানায় উভয়ের অভিভাবকদের পক্ষের উপস্থিতিতে  পুলিশ সদস্য রুমা ও আতিকুর রহমানের বিয়ে হয়েছে। বিয়েতে কাবিন ধরা হয়েছে ছয় লাখ টাকা’।






Shares