সরাইলে যুবলীগের দু’গ্রুপের উত্তেজনা, ১৪৪ ধারা জারী
মোহাম্মদ মাসুদ, সরাইল ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়ন শাখা যুবলীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত ২-৩ দিন ধরে সেখানে চলছে উত্তেজনা।
সংঘাত সংঘর্ষ ও সহিংসতার আশঙ্কায় গোটা ইউনিয়নে ১৪৪ ধারা জারী করেছেন সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উম্মে ইসরাত। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সেখানে ছিল ১৪৪ ধারা। ফলে কোন পক্ষই আনন্দ মিছিল করতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঠেকাতে গতকাল সকাল থেকেই সেখানে অবস্থান করছিল পর্যাপ্ত পরিমান পুলিশ। ইউএনও’র দফতর, দলীয় ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শাহজাদাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত করেন উপজেলা যুবলীগের একাংশ (সভাপতি ও সম্পাদক)। তারা ২০ ফেব্রুয়ারি আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকিল উদ্দিনকে আহ্বায়ক ও আলী হায়দারসহ পাঁচজনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করেন। ওই আহ্বায়ক কমিটি প্রত্যাখ্যান করে উপজেলা কমিটির অপর একটি অংশ (জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক।) তাঁরা গত সোমবার (০৬-০৩-১৭) আগের কমিটির সভাপতি শেখ দেলোয়ার হোসেনকে আহ্বায়ক ও ইকবাল মিয়াকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৪১ সদস্যের আরেকটি কমিটি ঘোষণা করেন।
দুই পক্ষের দুই কমিটি নিয়ে শাহজাদাপুর ইউনিয়নে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গত ২-৩ দিন আগে ওই ইউনিয়নে গতকাল বৃহস্পতিবার আনন্দ মিছিল করার ঘোষনা দেন উভয় গ্রুপের নেতারা। শাহজাদাপুর, হিন্দু অধ্যুষিত মলাইশ ও দেওড়া গ্রামের উভয় গ্রুপের যুবলীগের নেতা কর্মীরা গতকালের আনন্দ মিছিলকে সফল করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে থাকে। একই দিনে একই সময়ে উভয় গ্রুপের আনন্দ মিছিলকে ঘিরে গোটা ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠা ও টান টান উত্তেজনা। বিষয়টি জেনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ইসরাত গত বুধবার রাতেই গোটা ইউনিয়নে ১৪৪ ধারা জারী করেন। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের আদেশে গতকাল সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সেখানে যেকোন ধরনের সভা সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়। বিষয়টি সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সমগ্র ইউনিয়নে মাইকিং করে সকলকে জানিয়ে দেওয়া হয়। সকাল ১০টার আগেই সরাইল থানা, নাসিরনগর থানা, অরুয়াইল পুলিশ ফাঁড়ি ও শাহবাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির ৬০ জনেরও অধিক পুলিশ সদস্য অবস্থান নেয় শাহজাদাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে।
একটি কমিটির আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনন্দ মিছিল করতে বারণ করা হয়েছে। তাই আমরা আজ করিনি। তবে প্রতিপক্ষ কোনো কর্মসূচি দিলে আমরাও দিব।’
অপর কমিটির আহবায়ক আকিল উদ্দিন বলেন,‘উপজেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাদের অনুমোদন দিয়েছেন। আমরাই বৈধ। আমরা তাদের আগে কর্মসূচি দিয়েছিলাম। আমাদেরকে বাধা দিতে তারা পরে কর্মসূচি দিয়েছে। এতে আমাদের কর্মসূচি বাতিল হয়েছে।
সরাইল থানার ওসি রুপক কুমার সাহা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে লেন আমি সকাল থেকেই ফোর্স নিয়ে শাহজাদাপুর ইউনিয়নে রয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।