এম কে-১১ বাংলাদেশে এলো কিভাবে?
চট্টগ্রামের ‘জঙ্গি’ আস্তানা থেকে স্নাইপার রাইফেল উদ্ধারের ঘটনাকে উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, অত্যাধুনিক এ অস্ত্র বাংলাদেশে কোথা থেকে কিভাবে এলো এটিও প্রশ্নের বিষয়। নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, সমাজের মধ্যে বিভাজন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য মসজিদে হামলা করা হচ্ছে। যারাই করুক তারা জেনে শুনে পরিকল্পনা করে করছে। কাদিয়ানি মসজিদে হামলার ধরন দেখে মনে হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে যে ধরনের হামলা হয় সে ধরনের হামলা হয়েছে। এ হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস। তিনি বলেন, সৌদি সামরিক জোটে বাংলাদেশ যোগ দিয়ে নিজেদের বিপদ ডেকে আনলো কিনা সেটাও দেখার বিষয়। চট্টগ্রামে জঙ্গি আস্তানা থেকে এমকে-১১ রাইফেল উদ্ধার হয়েছে। এ রাইফেল তো সর্বাধুনিক অস্ত্র। মধ্যপ্রাচ্য ইরাকে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এ অস্ত্র জঙ্গিদের কাছে কিভাবে আসলো। এটা তো খোলা বাজারে কেউ কিনতে পারবে না। এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। এটার অনুসন্ধান কে করবে। জঙ্গি আস্তানাগুলো খুঁজে বের করার দায়িত্ব যাদের তারা কতটা পারদর্শী। গোয়েন্দাদের দুর্বলতা আছে। তাদের যে মুখ্য কাজ তারা সেটা বাদ দিয়ে অন্য কাজ করছে। এটাকে হালকা করে দেখার বিষয় না। দেশের মধ্যে যে জঙ্গি সংগঠনগুলো আছে তারা এখন কোথায়। তারা কি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে? তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা হলে কিভাবে মোকাবিলা করবে সরকার। এজন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া প্রয়োজন। যারা সরকারের সঙ্গে সুর মেলায় তাদের কথা শুনলে হবে না। এ নিয়ে জাতীয় রাজনৈতিক সংলাপের প্রয়োজন।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) এম মুনীরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম আত্মঘাতী সন্ত্রাসী হামলা হলো। এর দায় আইএস স্বীকার করেছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার ধরনের দিক থেকে নতুন মাত্রা যোগ হলো। দুদিক দিয়ে বিষয়টি ভালো নয়। প্রথম হলো- আগে শিয়াদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এখন কাদিয়ানিদের ওপর হামলা হলো। দ্বিতীয়ত হলো- এই প্রথম বাংলাদেশে আত্মঘাতী সন্ত্রাসী হামলা হলো। এর আগে আত্মঘাতী হামলা হয়নি। এতে সেক্টরিয়ান হামলার বিষয়টি প্রকাশ পাচ্ছে। চট্টগ্রামে জঙ্গি আস্তানা থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র এমকে-১১ উদ্ধারের বিষয়ে এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, এর আগে এত অত্যাধুনিক অস্ত্র বাংলাদেশের জঙ্গিদের হাতে দেখা যায়নি। এটি ভয়াবহ উদ্বেগের বিষয়।