রাহ্মণবাড়িয়া-৫ :: নির্বাচনী প্রচারনা শেষ,এখন কার মুখে থাকবে জয়ের হাসি
মিঠু সূত্রধর পলাশ, নবীনগর প্রতিনি ধি: আজ ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫(নবীনগর)আসনে নির্বাচনী প্রচারনা শেষ। এখন কার মুখে থাকবে জয়ের হাসি।
জানা যায়, ২১ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে ঘটিত এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩২ হাজার ৩১০জন। ভোটের জন্য লড়াই করছেন ৭ প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী তারা হলেন-আ’লীগের মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ ফয়জুর রহমান বাদল (নৌকা),জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোঃ মোবারক হোসেন দুলু (লাঙ্গল),ইসলামী ঐক্যজোটে মনোনীত প্রার্থী মোঃ মেহেদী হাসান(মিনার),বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি মনোনীত প্রার্থী জামাল সরকার(একতারা),বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মনোনীত প্রার্থী ছৈয়দ জাফরুল কদ্দুছ(ফুলের মালা),তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোঃ হাবিবুর রহমান(সোনালী হাস) ও সতন্ত্র একেএম মমিনুল হক সাঈদ(ঈগল)অবশ্য এ সতন্ত্র প্রার্থী ইতিমধ্যে নিজেকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিয়ে নৌকাকে সমর্থন জানিয়ে নৌকার পক্ষে প্রচারনা চালিয়েছেন। এদের মধ্যে চার প্রার্থী বাদল,দুলু,মেহেদী ও জামাল রয়েছেন আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত নৌকার বিপরিতে তিন প্রার্থীকে প্রচারনায় দেখা গেলেও নৌকাকে ডিঙ্গিয়ে বিজয়ের মুখ দেখা খুবই কঠিন। ৪জন প্রার্থী ছাড়া অন্যান্য প্রার্থীদের কোন প্রচার প্রচারনা তেমন চোখে পরেনি। লাঙ্গল,মিনার,একতারা প্রচারনায় থাকলেও এ ক্ষেত্রে প্রচারনায় নৌকার চেয়ে পিছিয়ে ছিল প্রতিদ্বন্দ্বীরা।
এবার নিরব ভোট বিপ্লব হবে, জনগন তাকেই বিজয়ী করবে দূঢ় আশাবাদ মিনার প্রতিকে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মেহেদী হাসানের।তিনি বলেন,আমি এমপি হতে পারলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যোগাযোগ,শিক্ষা,স্বাস্থ্য ও দূর্নীতি বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টি করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে কাজ কবর।
একতারা প্রতিকে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি মনোনীত প্রার্থী জামাল সরকার তিনি বিজয়ী হবেন এ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, উপজেলায় আমার ভোট ব্যাংক রয়েছে,প্রতিটি গ্রাম পর্যায়ে মাইজবান্ডারীর বহু আশেকান ভক্ত রয়েছেন,তারা আমার জন্য ভোট প্রার্থনা করছেন।আমি এমপি হতে পারলে নবীনগরে গ্যাস সংযোগসহ ব্যাপক উন্নয়ন করব।
আওয়ামীলীগের দুঃশাসনে নৌকার প্রতি আস্থা হারিয়েছে মানুষ, তাই কৃষক শ্রমিক মেহনতী মানুষের আস্থার প্রতিক লাঙ্গলকেই বেছেঁ নেবে উপজেলাবাসী দৃঢ়তার সাথে বললেন, লাঙ্গল প্রতিকে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোবারক হোসেন দুলু। তিনি বলেন, আমি ‘এমপি’ নির্বাচিত হতে পারলে, নবীনগরের রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন,শিক্ষা স্বাস্থ্য ও মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত ও গ্যাস সংযোগের ব্যবস্থাসহ নবীনগরকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের মধ্য দিয়ে একটি মডেল উপজেলায় রূপান্তর করবো এবং আমার কোন লঠিয়াল সিন্ডিকেট বাহিনী থাকবেনা।
নৌকা প্রতিকে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ফয়জুর রহমান বাদল নবীনরগর উপজেলাবাসীর প্রতি আস্থা রেখে বলেন,মানুষ আমাকে ভালবাসে,মানুষের এ ভালবাসার জোরেই আমি মনোনয়ন পেয়েছি,আওয়ামীলীগের আমলেই দেশের উন্নয়ন হয়,নবীনগরে আমার শাসনামলে বড় বড় মেগা প্রজেক্টসহ ব্যাপক উন্নয়ন করেছি,এ উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে,আমি এমপি হতে পারলে নিশ্চয়তা দিচ্ছি সামাজিক নিরাপত্তা,দুর্নীতি,অপশাসন, অন্যায়,অবিচার,চাঁদাবাজী,টেন্ডা রবাজী রোধে এবং মাদকের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিব,পঞ্চ পান্ডব বলেন আর ছয় খলিফাই বলেন এসব সিন্ডেকেটকে প্রশ্রয় দিব না, তিনি তার নির্বাচনী বিভিন্ন জনসভায় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন,আমি বা আমার দলের লোকজন কোন অন্যায় অবিচার করলে লিখবেন,স্বাধীন ভাবে লিখবেন,যেন আমারা জবাবদিহিতার মধ্যে থাকি,আমি আপনাদের পাশে আছি ।
এলাকার সচেতন ভোটার কৃষক আলী আহম্মদ বলেন,আওয়ামীলীগ দু’ভাবে বিভিক্ত,একটি পক্ষের নেতা/কর্মীদের নিরব থাকার কারনে সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী। তবে এটি মানতে নারাজ নৌকার কর্মী খাইরুল আমিন তিনি বলেন,ফয়জুর রহমান বাদল ব্যাপক জনপ্রিয় ব্যক্তি,আওয়ামীলীগ বড় দল হিসাবে নেতা/কর্মীদের মতবিরোধ থাকতে পারে কিন্তু দলীয়ভাবে কোন বিরোধ নেই, আমরা ঐক্যবদ্ধ,নৌকার বিজয়ের প্রশ্নে আমরা একাট্টা হয়ে কাজ করছি। জাতীয় পার্টির কর্মী মোশারফ হোসেন বলেন,আওয়ামীলীগ ব্যর্থ সরকার, লাগামহীনভাবে জিনসপত্রের দাম বাড়ছে,সরকারের হাতে বাজারের নিয়ন্ত্রণ নেই,লুটপাটে দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যস্থ,যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় জনতার দল হিসাবে জাতীয় পার্টিকেই বেছেঁ নিবে জনগন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন,আওয়ামীলীগের প্রার্থী ফয়জুর রহমান জনপ্রিয় ব্যক্তি,জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোবারক হোসেন দুলু’র ব্যাপক পরিচিতি ও ভাল মানুষ হিসাবে তার সুখ্যাতি রয়েছে। দু’জনের যেই আসুক জনগনের জন্য কাজ করবেন প্রত্যাশা তাদের। যেহেতু বড় একটি দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে এবং প্রকৃতিও বিরুপ ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের দিন শৈতপ্রবাহ থাকাতে পারে সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কতটুকু হবে সেটা ভাবনার বিষয়।
« নির্বাচনী অ্যাপে ঘরে বসেই মিলবে ভোটার নম্বর ও কেন্দ্র (পূর্বের সংবাদ)
(পরের সংবাদ) সরাইল হত্যা মামলার মূল অপরাধি’কে বাদ দেয়ার অভিযোগ »