সৌদিতে নিহত বাতেনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম
সৌদি আরবের ইয়েমেন সীমান্তে মর্টার হামলায় নিহত দুই বাংলাদেশির মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাতেনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে অকূল-পাথারে পড়েছেন তার হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা।শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৭টার দিকে সৌদি আরবের জিজানের সামতাহ জেনারেল হাসপাতালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ইয়েমেন সীমান্ত থেকে ছোড়া মর্টারে মৃত্যু হয় হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কর্মী বাতেন ও টাঙ্গাইলের নুরু নামে এক ব্যক্তির।
বাতেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের গোলপুকুরিয়া গ্রামের মোহন মিয়ার ছেলে।
বাতেনের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে বাতেন মেঝো। ২০০৬ সালে একমাত্র সম্বল তিন শতক জমি বিক্রি ও চড়া সুদে ঋণ করে ছেলেকে সৌদিতে পাঠান তার বাবা। গত বছর ছুটিতে এসে পাশের শ্যামগ্রাম গ্রামের রিনা আক্তারকে বিয়ে করেন তিনি। কিছুদিন পর আবারও সৌদিতে পাড়ি জমান। র্বতমানে দেড় শতক জমিতে থাকা বাড়িটি ছাড়া তাদের আর কোনো সহায়-সম্বল নেই।
সম্প্রতি বাতেনের ছোট ভাইকে বিদেশ পাঠাতে গিয়ে আরও নয় লাখ টাকার ঋণে জড়ায় পরিবারটি। এ পরিস্থিতিতে একমাত্র উর্পাজনক্ষম বাতেনের মৃত্যুতে পথে বসার যোগাড় হয়েছে তার পরিবারের। শুক্রবার দুপুরে বাতেনের মৃত্যুর সংবাদ বাড়িতে পৌঁছালে বাতেনের মা-বাবা কান্নায় বার-বার মূর্ছা যান। খবর পেয়ে বাড়িতে ভিড় করেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
বাতেনের বাবা মোহন মিয়া বলেন, ‘আমরার কিছু নাই বাবা। আমার এই পোলার রুজি-রোজগার দিয়াই আমার পরিবার চলতো। এখন আমরার কি অইব।’তিনি ছেলের মৃতদেহ সরকারিভাবে দ্রুত দেশে আনার দাবি জানান।
স্থানীয় রতনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম রফিকুল্লাহ জানান, টেলিভিশনের খবরের মাধ্যমে প্রথম বাতেনের মৃত্যুর সংবাদ জানতে পারেন তারা। বাতেনদের পরিবার একেবারেই দরিদ্র।তার আয়ের উপরই সংসার চলতো।