নবীনগরে খেয়া পারাপারে দ্বিগুন ভাড়া উত্তোলন,অসহায় সাধারন মানুষ



মিঠু সূত্রধর পলাশ নবীনগর প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা সদরের ‘মনতলা ঘাট থেকে সীতারামপুর’ ঘাট পর্যন্ত নৌকা পারাপারে পাঁচ টাকার স্থলে ১০ টাকা করে আদায় করছেন ইজারাদারের লোকজন। এর আগে গত ১ জুলাই থেকে এই নৌঘাটে জেলা পরিষদ থেকে ‘মাশুল তালিকা’ টাঙানো হলেও প্রশাসনের কঠোর নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গত এক মাস ধরে ৫টাকার পরিবর্তে ১০ টাকা করে আদায় করা হোচ্ছে। মনতলা নৌঘাটে জেলা পরিষদ থেকে টাঙানো ‘মাশুল তালিকা’ সেখানে বলা হয় কোনোভাবেই যেন একজন ব্যক্তির কাছ থেকে পাঁচ টাকা ও মটর সাইকেল জানবাহনে কাছ থেকে ১৫ টাকার বেশি নৌকা ভাড়া আদায় করা না হয়। আর এ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া আদায়কারীদের সাথে কথা কাটাকাটি সহ নানান সমস্যা হচ্ছে।
সরজমিনে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,সড়ক পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরে যাতায়তের জন্য হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এই রাস্তাটি ব্যাবহার করে। তাছাড়াও উপজেলার উত্তরাঞ্চলের তিনটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এ খেয়াঘাট দিয়ে নবীনগর উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। কিন্তু খেয়াঘাটের ইজারাদারদের লোকজন বছরের পর বছর ধরে যাত্রীদের কাছ থেকে জন প্রতি পাঁচ টাকার বদলে ১০ টাকা করে আদায় করছেন। পাশাপাশি মোটরসাইকেল পারাপারে ১৫ টাকা নেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও, ইজারাদারের লোকজন প্রতি মোটরসাইকেলের ভাড়া ৫০ টাকা করে আদায় করছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নবীনগর সদরে প্রশাসনের চোখের সামনে দীর্ঘদিন ধরে এমন জুলুম অত্যাচার চললেও, এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বরাবরাই রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছেন। আর্থিক ভাবে তাদের ম্যানেজ করেই এসব করা হয়।
সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পত্র-পত্রিকা ও ফেসবুকে প্রচুর লেখালেখি হলে, এর প্রতিকার নিয়ে গত ২৯ জুন সংশ্লিষ্ট ইজারদার, সুধীজন, বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নবীনগর ডাকবাংলোর প্রাঙ্গনে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নবীনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জেপি দেওয়ান, ওসি রনোজিত রায়, নবীনগর বাজার কমিটির সভাপতি মনির হোসেনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে নতুন করে ইজারা না হওয়ায়, স্থানীয় প্রভাবশালী তিন ব্যক্তিকে ঘাটটি ১৫ দিনের জন্য খাস কালেকশানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে যাত্রীদের কাছ থেকে কোনোভাবেই জন প্রতি পাঁচ টাকা ও মোটরসাইকেল থেকে ১৫ টাকার বেশি আদায় করা যাবে না বলে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসনের খাস কালেকশানের লোকজনও গত এক মাস ধরে আগের মতোই ১০ টাকা ও ৫০ টাকা করেই আদায় করছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন হয়তো ম্যানেজ (!) হয়ে গেছেন। নাহলে প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিদিন সাধারণ মানুষের ওপর এতটা অত্যাচার হওয়ার পরও প্রশাসন কেন চুপ করে আছে?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাঝি জানান,সরকারি ভাবে ১০ লাখ টাকায় ঘাট ডেকে এনে স্থানিয় প্রভাবশালিদের কাছে সেই ইজারা ৩৮ লাখ টাকায় বেচলে ওরাতো (ইজারাদার) অনিয়ম করবেই।
এ বিষয়ে নবীনগরের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাসুম জানান,উজারাদারদের কয়েক বার তলব করে বিষয়টি অবগত করানো হয়েছে।নৌঘাটে ‘মাশুল তালিকা’ টাঙানো হয়েছে। এর পরও নিয়ন্ত্রন না হলে আমি কি করবো। আমি বিষয়টি জেলার মাসিক সভায় উত্থ্যাপন করবো।